নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেড এলাকায় ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন, পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১০টি মোটরসাইকেল এবং ভাঙচুর করা হয়েছে প্রায় ১২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুরাতন ভবনের সামনে শিরাইল-নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে এই সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌথ বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবস্থা নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির দুই পক্ষ—একটি মনির হোসেনের নেতৃত্বে, যিনি সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, এবং অন্যটি জেলার সাবেক সহআইন সম্পাদক শাহ আলম মানিকের অনুসারী—পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ৩০০ জন অংশ নেয়, যাদের হাতে পিস্তল, রামদা ও লাঠিসোটা ছিল। দুই ঘণ্টার এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে আদমজী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মনির হোসেন অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর আদমজী ইপিজেড এলাকায় ১৭টি কারখানায় ঝুট ব্যবসা পরিচালনা করেন। তার ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি এবং যুবলীগের পানি আক্তার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন। বৃহস্পতিবার মনিরের সমর্থকরা ইউনিভার্সেল কারখানায় মাল সরবরাহ করতে গেলে তাদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
মনির হোসেন আরও বলেন, “সাগরের ফুফাতো ভাই সোহাগ ডিএনডি ক্যানেল থেকে আমাদের ওপর গুলি চালান। আমাদের অন্তত ১৪-১৫ জন কর্মী ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছে এবং আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, রাকিবুর রহমান সাগর দাবি করেন, “আওয়ামী লীগের অনেক নেতা এলাকা ছেড়ে গেলেও তাদের সহিংস বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। বিকেলে ছাত্রদল নেতাদের ওপর হামলা হলে স্থানীয়রা তাদের প্রতিহত করে।”
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম জানিয়েছেন, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ঝুট ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌথ বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।