পাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)—জন্ম নিয়েছিল এক স্বপ্ন নিয়ে, একটি জ্ঞানভিত্তিক প্রজন্ম গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে। সময়ের পরিক্রমায় সেই স্বপ্ন আজ ১৮ বছরে পা দিয়েছে। এই সতেরো বছরের পথচলায় বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধুমাত্র জ্ঞানচর্চার একটি কেন্দ্র হিসেবেই গড়ে ওঠেনি, বরং একটি প্রাণচঞ্চল প্রগতিশীল প্রাঙ্গণে রূপ নিয়েছে, যেখানে অজস্র তরুণ-তরুণী নিজেদের ভবিষ্যতের ভিত গড়ে তুলছে।
বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালের ১৫ জুলাই “পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১” প্রণয়ন করার মাধ্যমে পাবনা জেলার নগরবাড়ী মহাসড়কের উত্তর পাশে গয়েশপুর ধোপাঘাটা নামক স্থানে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর দেশের ২৯তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ৭ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। শুরুতে রাজাপুরের টিটিসি ক্যাম্পাসকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে পাবনা শহরের ৫ কিলোমিটার পূর্ব দিকে রাজাপুর নামক স্থানে মূল ক্যাম্পাস চালু করা হয়।
২০০৯ সালের ৫ জুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মনে করেন, পাবিপ্রবি কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়—এটি তাঁদের দ্বিতীয় ঘর, তাঁদের স্বপ্ন বুননের জায়গা। ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম বলেন, “পাবিপ্রবি আমাকে আত্মবিশ্বাস ও স্বপ্ন দেখার সাহস দিয়েছে। এই দিনটায় আমরা সবাই গর্বিতভাবে বলি—হ্যাঁ, আমি পাবিপ্রবির শিক্ষার্থী।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আরও অগ্রগতি কামনা করেন শিক্ষার্থীরা। কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাইম জিম বলেন, “আমরা চাই পাবিপ্রবি হোক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কেন্দ্র। গবেষণায় আরও সুযোগ-সুবিধা পেলে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারব।”
বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এ দিনটি শুধু উদযাপনের নয়, বরং এটি তাঁদের আত্মপরিচয়ের দিন। কিন্তু এ বছর কোরবানি ঈদের ছুটি থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে না।
কিন্তু প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিভিন্নভাবে তাদের ভাবনা প্রকাশ করছে। ‘
সমাজকর্ম বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী হাসিব মিয়া বলেন,’পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমার চাওয়া গুলো থাকবে যে
১.” শিক্ষা,গবেষণা, নৈতিকতা ও নেতৃত্ব” এই চার স্তম্ভের ওপর দাড়িয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বুকে একটি শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে।
২. সতেরো বছর হয়ে গেলেও কোনো সমাবর্তন হয়নি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে, খুব দ্রুত একটি সমাবর্তন হোক এই মিনতি।
৩.গরমের দিনে প্রচন্ড গরমে একটু স্বস্তির ঠাই খোঁজার মতো তেমন গাছ নেই তাই দাবি থাকবে গাছ লাগিয়ে পরিবেশ শীতল থাকে যাতে।যেহেতু এগুলো তৎক্ষনাৎ হবে না তাই আপাতত কিছু ছাউনির ব্যবস্থা করা যেতে পারে যাতে শিক্ষার্থীরা গরম থেকে বাঁচতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হোক।
আশা করি এসব সংকট কাটিয়ে উঠে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠবে বাংলাদেশের অনন্য ও অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দিন হোক সুন্দর ও সাফল্যমন্ডিত।’
এই দিনটি শিক্ষার্থীদের মনে নতুন উদ্যম ও অনুপ্রেরণা জোগায়—নিজেকে গড়ার, সমাজে অবদান রাখার, আর একটি সমৃদ্ধ পাবিপ্রবি গঠনের শপথ নেওয়ার দিন হিসেবেই তারা দেখে ‘৫ জুন’ কে।