পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, পায়রা বন্দর দেশের অর্থনীতির জন্য এক ব্যর্থ প্রকল্প। এটি প্রকৃতপক্ষে কোনো সমুদ্রবন্দর নয়, এমনকি কার্যকর নদীবন্দর হিসেবেও এটি কাজ করতে সক্ষম নয়।
রবিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ উল্লেখ করেন:
❝পায়রা বন্দরটি মূলত পায়রা কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু এতে প্রচুর সরকারি অর্থ ব্যয় হলেও কাঙ্ক্ষিত কার্যকারিতা পাওয়া যায়নি। প্রকল্পের খরচ ক্রমাগত বাড়তে থাকায় এটি এখন দেশের অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।❞
পরিকল্পনা উপদেষ্টা যোগ করেন, এটাকে আদতে ‘একটি ঘাট’ হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে। এই প্রকল্পের পরিকল্পনা ও সম্ভাব্যতা যাচাই করা হলে এটি অনুমোদনই পেতো না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৈঠকে একনেক ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়, যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১,১৩৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১৪,১৯৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ৬,৫৩৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৪০৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, সরকারের এখন থেকে প্রকল্প মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আরও কঠোর হতে হবে। শুধুমাত্র অনুমোদন পেলেই প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করা যাবে না, বরং তার অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও সম্ভাব্যতা বিবেচনা করতে হবে।
একনেক বৈঠকে আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে শক্তিশালীকরণ, সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নির্মাণ, এবং সারাদেশে ক্ষতিগ্রস্ত খাদ্য গুদামের সংস্কার।
এছাড়া, দেশের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ নদী সংরক্ষণের জন্যও একটি নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে করতোয়া, তিতাসসহ অন্যান্য নদীর প্রাণ ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে, যাতে এর সুবিধা প্রকৃত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছেই পৌঁছায়।