প্রতারনার মামলায় ২০২১ সালে মডেল, অভিনেত্রী রোমনা ইসলাম স্বর্নাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সৌদি প্রবাসী কামরুল হাসান জুয়েল মোহাম্মদপুর থানায় রোমানা ইসলাম স্বর্ণার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন- প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অজুহাতে কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়েছে স্বর্ণা। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ স্বর্ণাকে গ্রেফতার করেছিল। তিন বছর পরে এসে ২০২৪ সালের ২রা ডিসেম্বর ঘটনার খোলাসা করে সংবাদ সম্মেলন করেন নায়িকা নিজেই। সম্মেলনে বক্তব্যে নায়িকা জানান যেসব অভিযোগ তার নামে আছে সবগুলোই ছিল উল্টো ঘটনা। কামরুল হাসান জুয়েল ছিলেন তার দ্বিতীয় স্বামী। এক বন্ধুর মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয় এবং অনেকদিন স্বর্নার পেছনে পেছনে ঘুরে তাকে বিয়ের জন্য রাজি করে জুয়েল। তবে বিয়ের পরই তার চেহারা পাল্টে যায় এবং বেরিয়ে আসতে থাকে আসল রুপ।
নায়িকাকে অভিনয় চালিয়ে যেতে দেবেন এমন কথা দিলেও বিয়ের পর শুরু করে নানা অত্যাচার এবং অভিনয় থেকে সরে আসতে বাধ্য করে স্বর্নাকে। তার আগে একজন স্ত্রী আছেন সেটিও গোপন করেছিল জুয়েল। এসব অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাকে ডিভোর্স দিলে তখন ক্ষোভ থেকে স্বর্নার নামে মিথ্যা মামলা করেন জুয়েল। যে মামলায় নায়িকা, তার মা এবং ছেলেও রেহাই পায় নি। এক পর্যায়ে আমেরিকা চলে যান নায়িকা। কিন্তু সেখানে থেকেও পরিবারকে নিয়ে নিয়মিত হুমকি পেতি থাকেন স্বর্না। তিনি জানান এসব হুমকি এবং মিথ্যা মামলার পেছনে ছিলেন সাবেক ডিবি হারুন।
নায়িকা জানান জুয়েল তৎকালীন আওয়ামী লীগের ক্ষমতাধর ব্যাক্তিদের ছত্রছায়ায় নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলন। সেসব ক্ষমতাধরদের মধ্যে ছিলেন সাবেক সরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক ডিবি হারুন। মূলত আসাদুজ্জামান এর চাঁদা তোলা কোটি কোটি টাকা জুয়েল পাচার করতো। তার কাছে বিভিন্ন সময়ে অনেক মেয়েদেরও পাঠাতো।আসাদুজ্জামানের এসব অপকর্মে সাহয্য করার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা পেত জুয়েল। মূলত হুন্ডির মাধ্যমে আসাদুজ্জামান এবং হারুনের কালো টাকা সৌদিতে পাচার করতেন তিনি। এছাড়াও সেসব নেতাদের হয়ে মানুষের সম্পদ আত্মসাৎ এবং হুমকি দেয়াও ছিল জুয়েলের কাজেরই অংশ। নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগের সেসব সন্ত্রাসীদের সাথে স্বর্নাকে অবৈধ সখ্যতা গড়ে তোলার জন্যও প্রতিনিয়ত চাপ দিতেন জুয়েল।
২০২১ সালে যখন স্বর্নাকে জেলে রাখা হয় তখন জুয়েলকে তালাক না দেয়ার শর্তে তাকে জেল জামিনে বের করে আনেন জুয়েল। স্বর্না তার অত্যাচার থেকে বাঁচকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েও শান্তি পান নি। এমনকি ছাত্র আন্দোলনের সময় পর্যন্ত জুয়েল এবং ডিবি হারুনের কাছ থেকে হুমকি পেয়ে এসেছেন এই নায়িকা।