পঞ্চগড়ের ভিতরগড় সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে মো. আল আমিন (৩৬) নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর বিএসএফ তাঁর মরদেহ ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় সীমান্তের ৭৪৪ নম্বর মেইন পিলারের ৭ নম্বর সাব-পিলার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভারতের ভাটপাড়ায় কাঁটাতারের বেড়ার লিংক রোড সংলগ্ন এলাকায় এই গুলির ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে এক পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিজিবি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে মরদেহ ফেরতের দাবি জানায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মো. বদরুদ্দোজা।
নিহত মো. আল আমিন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের জিন্নাতপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং প্রায়ই অবৈধভাবে ভারতে যাতায়াত করতেন।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে ১০ থেকে ১৫ জন চোরাকারবারি গরু নিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের দিকে আসছিলেন। এ সময় ভারতের ৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ভাটপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়, যেখানে আল আমিন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বিজিবি এই ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে সীমান্তে গুলি চালিয়ে হত্যার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করে। পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দাবি করে, চোরাকারবারিরা গরু নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তারা বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণ চালায়, এতে কয়েকজন বিএসএফ সদস্য আহত হন। আত্মরক্ষার্থে তারা গুলি চালালে আল আমিন নিহত হন বলে দাবি করেছে বিএসএফ।
বিজিবি পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘যদি কেউ অপরাধ করে, তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। গুলি চালিয়ে হত্যা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’ লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে বিজিবি জানিয়েছে, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে দুই দেশের পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে বিএসএফ।