দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের এক ছোট গ্রাম—শান্ত, সবুজ, আর সহজ-সরল মানুষের জীবনযাপন। অথচ সেখানেই মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ রেখে প্রতিদিন ডলার আয়ে ব্যস্ত একদল তরুণ। কারো পরিচয় ইউটিউবার, কেউ ফেসবুকে কনটেন্ট ক্রিয়েটর, কেউবা আবার ফ্রিল্যান্সিংয়ে ব্যস্ত। তারা কেউই শহরে যায়নি, তবু যুক্ত হয়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে।
“আগে শুধু ভাবতাম চাকরি করব, এখন নিজের বস আমি নিজেই,” — বলছিলেন ২১ বছর বয়সী মাহমুদুল হাসান, যিনি Fiverr ও Upwork প্ল্যাটফর্মে গ্রাফিক ডিজাইনিং করে মাসে আয় করছেন প্রায় ২৫ হাজার টাকা।
স্থানীয়ভাবে পরিচিত মিঠু ভাই, যিনি ‘মিঠুর রান্নাঘর’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল চালান, সেটির সাবস্ক্রাইবার এখন ১ লাখেরও বেশি। “শখে শুরু করেছিলাম। এখন পরিবার চালাই এই চ্যানেল থেকেই,”—হাসতে হাসতে বললেন তিনি।
এই দৃশ্যপট এখন শুধু হিলিতে নয়, ছড়িয়ে পড়েছে কুড়িগ্রাম, পটুয়াখালী, নেত্রকোনা, ঝিনাইদহের মতো অনেক গ্রামেই। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন অনেকটা বাস্তব রূপ পেয়েছে এই তরুণদের হাত ধরে।
স্থানীয় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা রুবিনা খাতুন জানালেন, “প্রতিদিন কেউ না কেউ আসে জানতে—কীভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা যায়, ইউটিউব চ্যানেল খোলা যায়, পেজ মনিটাইজেশন কীভাবে হয়।”
তবে এই স্বপ্নযাত্রার পথ একেবারে মসৃণ নয়। বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা, দক্ষতার অভাব, এবং নিরাপদ অনলাইন অর্থ লেনদেনের জটিলতা—এখনো বড় বাধা।
“কাজ তো পাই, কিন্তু পেমেন্ট তুলতে গিয়ে ঝামেলা হয়,”—বললেন সোনিয়া আক্তার, যিনি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার।
তবু সব বাধাকে অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে তারা। শুধু নিজের নয়, পরিবার ও গ্রামের আর্থিক কাঠামো বদলে দিচ্ছে এই তরুণেরা।
উপসংহার:
এই তরুণ প্রজন্ম প্রমাণ করছে—একটি স্মার্টফোন, ইন্টারনেট আর শেখার আগ্রহ থাকলেই গ্রাম থেকেও গড়ে তোলা যায় ভবিষ্যৎ। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা বাড়লে ডিজিটাল বাংলাদেশ শুধু স্লোগানে নয়, বাস্তবে রূপ নেবে প্রতিটি গ্রামের উঠানে