বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ২য় বিজয় দিবস (৫ আগস্ট ২০২৫) উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত “বিজয় ভোজ” নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবারের ভোজের জন্য জনপ্রতি মাত্র ১৫০ টাকা বাজেট নির্ধারণ করেছে, যার মধ্যে ১০০ টাকা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাকি ৫০ টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হবে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই বাজেটে সম্মানজনক কোনো খাবার দেওয়া আদৌ সম্ভব নয়। বর্তমানে বাজারে একটি মানসম্পন্ন খাবারের (যেমন মোরগ পোলাও) দামই ১৬০–১৭০ টাকা। সেখানে মাত্র ১৫০ টাকায়, তাও কোমল পানীয় ব্যতীত, উৎসবের খাবার কীভাবে দেওয়া সম্ভব—এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “পূর্বে অন্যান্য দিবসে হলে আয়োজিত খাবারের জন্য জনপ্রতি ২২০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত বাজেট বরাদ্দ ছিল। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ২য় বিজয় দিবসের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিনে বাজেট কমিয়ে ১৫০ টাকা করাটা শিক্ষার্থীদের প্রতি অবজ্ঞার শামিল।”
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শরিফ উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “১৫০ টাকার বাজেট দিয়ে ‘বিজয় ভোজ’ আয়োজন শিক্ষার্থীদের অনুভূতির সঙ্গে তামাশা করার মতো। যেখানে প্রতিদিনের একটি সাধারণ খাবারেরই দাম তার চেয়ে বেশি, সেখানে উৎসবের দিনে এমন আয়োজন লজ্জাজনক। এই ধরনের বরাদ্দ আমাদের বিজয়ের মর্যাদাকে খাটো করে। আমরা চাই, সম্মানের সাথে অংশগ্রহণের মতো পরিবেশ নিশ্চিত হোক।”
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মোশাররফ বলেন, “আসলে এই টাকায় মানসম্মত খাবার দেওয়া সম্ভব না। আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলব যাতে একটা মানসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করা যায়। আমরা আশাকরি প্রশাসন একটা ব্যবস্থা নেবে।”
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ বলেন, “এটা মানানসই না। বাজেটটা একটু বাড়লে একটি স্ট্যান্ডার্ড খাবার দেওয়া যাবে।”
ববি প্রক্টর ড. রাহাত ফয়সাল বলেন, “যেহেতু শিক্ষার্থীদের থেকে একটি বক্তব্য এসেছে, সেহেতু আমরা আবারও আলোচনায় বসব। আসলে এটা তো শিক্ষার্থীদের জন্যই। কী করলে ভালো হয়, আমাদের সক্ষমতা কতটুকু—সেই অনুযায়ী আমরা একটি ফিডব্যাক দেব।”
ববি উপাচার্য ড. তৌফিক আলম বলেন, “প্রশাসন থেকে ১০০ টাকা এবং শিক্ষার্থীরা দেবে ৫০ টাকা—এটা দিয়ে যা হবে, তাই দিয়েই সবাই খাব। এটার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা কোনো বাজেট থাকে না। যতটুকু আমরা পারব, ততটুকুই করব।”