ববি শিক্ষার্থীদের ন্যায্যমূল্যের বাজার: সন্তোষ ক্রেতারা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ন্যায্যমূল্যের বাজার। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ভোলা রাস্তার কাঁচা বাজার এলাকায় আজ সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হয় বিনা লাভের এই বাজার। উদ্যোক্তারা জানান মূলত ঊর্ধ্বগতির বাজারে ক্রেতা সাধারণ মানুষকে একটু স্বস্তি দিতেই এবং বাজারে বিক্রেতাদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে তাদের এই আয়োজন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাঁচা বাজারে সব জিনিসের দাম অনেক বেশি হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও সেই সুযোগে অধিক লাভের আশায় জিনিসের ন্যায্য মূল্য রাখছেন না। সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামেই ক্রেতারা কিনতে হচ্ছে সে সকল নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য। বিক্রেতারদের সেই সিন্ডিকেট ভেঙে বাজারে দ্রব্যমূল্যে স্বস্তি ফিরে আনতেই বিনা লাভের এই বাজার শুরু করেছেন কিছু শিক্ষার্থীরা। এতে করে সন্তোষ দেখা দিয়েছে এই অঞ্চলের ক্রেতাদের মাঝে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষজন খুব বেশি সন্তোষ প্রকাশ করছেন।

সরেজমিনে আজ সকালে অস্থায়ী বাজারে দেখা গেছে পটল কেজি ৫০ টাকা, পেঁপে কেজি ৩৫ টাকা, কুমড়া কেজি ৫৫ টাকা, মূলা প্রতি কেজি ৩০ টাকা, লেবুর হালি ১৫ টাকা, শাকের আঁটি ১৫ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ১২০ টাকা, জলপাই কেজি ৩৫ টাকা, শিম কেজি ১২০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১১০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

বাজার করতে আসা ক্রেতা মোহাম্মদ সেলিম মিয়া জানান, শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। আমি তিন রকমের সবজি কিনেছি। যেগুলোতে বাজার দর থেকে গড়ে ২০/৩০ টাকা করে কমে পেয়েছি। যাতে উপকৃত হয়ে খুবই ভালো লাগছে। বাহিরের দামের সাথে তুলনা করলে মোটামুটি ভালোই সাশ্রয়ী হচ্ছে এই বাজারে। এটা চালু থাকলে ভালো সাড়া পাবে এবং মানুষজন ও কিছুটা স্বস্তি ফিরে পাবে। এতে সিন্ডিকেটও খুব সহজে ভেঙে যাবে।

বাজার করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফজিলত বলেন, “এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। নিয়মিত বাজার করি, সেই তুলনায় আজ অনেক সাশ্রয়ে পণ্য পাচ্ছি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের একটু হিসেব করেই চলা লাগে। ঊর্ধ্বগতির বাজারে যা আমাদের জন্য খুবই উপকারী হবে। বাজারের চেয়ে অনেকটাই কমে কিনতে পেরে ভালো লাগছে। আশা করি এটা চলমান থাকবে।

বিনালাভের এই বাজারের উদ্যোগ নেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একজন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের মো. মুমিনুল ইসলাম।তিনি এই বিষয়ে বলেন,
আমরা কয়েকজন মিলে স্বেচ্ছাসেবা হিসেবে বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙার জন্যই মুলত এই উদ্যোগ নেয়া। আমরা আরো আগেই শুরু করতে ছেয়েছিলাম কিন্তু ক্যাম্পাসের অস্থিশীল পরিস্থির কারনে সম্ভব হয়নি। আজকে থেকে শুরু করেছি যা চলমান থাকবে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত।
আজকে ১০ ধরনের সবজি দিয়ে শুরু করেছি তা আরো বাড়াবো দিনে দিনে। প্রথম দিন হিসেবে খুব ভালোই সাড়া পাচ্ছি। ক্রেতারাও সন্তোষ এবং তা দেখে ভালো লাগছে। আশা করছি দ্রুতই অন্যান্য বিক্রেতারাও ন্যায্য মূল্যে বিক্রি শুরু করবেন।