বর্তমান সময়ে সারাদেশে চলমান ধর্ষণের মহোৎসবের বিরুদ্ধে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও “Break the Silence” নামে কর্মসূচি পালন করে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরবর্তীতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিলটি আবার গ্রাউন্ড ফ্লোরে ফিরে আসে।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘একশন একশন, ডাইরেক্ট একশন’ , ‘বিচার বিচার বিচার চাই, ধর্ষকের বিচার চাই ‘, ‘জ্বালো জ্বালো, ‘আগুন জ্বালো ‘, ‘ধর্ষকের বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো ‘ এই সব স্লোগান দিতে দেখা যায়।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থী সুজয় শুভ বলেন, আমরা একসময় বিশ্বাস করতাম, একজন নারী তার অভিভাবকের সাথে নিরাপদ। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দেখা গেছে, একজন নারী তার স্বামীর সাথেও থাকলেও ধর্ষণের শিকার হয়েছে। অর্থাৎ, নারী অভিভাবকের সাথেও নিরাপদ নয়, এমনকি মৃত্যুর পরেও নিরাপদ নয়।আমরা দেখেছি, কোনো কোনো হাসপাতালের কর্মরত ডোম মৃত নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা চালিয়েছে। ফলে, আমরা এমন একটি সমাজ বা ভূখণ্ড তৈরি করেছি, যেখানে একজন নারী মৃত্যুর পরেও নিরাপদ নয়।
এই বাস্তবতায়, আমার পরিবার, আমার সন্তান, আমার প্রিয় মানুষজন, আমার বন্ধুরা কিংবা আমার ছোট বোনরা এই পরিবেশে বসবাস করুক—এটি আমি চাইবো না।
আজকের আয়োজকদের উদ্যোগ “Break the Silence”-এর প্রতি আমি বিশ্বাস রাখি। আমাদের এতদিনের নীরবতা ভাঙার সময় এসেছে। প্রত্যেক মানুষকে এখন নীরবতা থেকে বেরিয়ে এসে কথা বলা শুরু করা উচিত।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন,
“বাংলাদেশে ধর্ষণ মহামারির রূপ নিয়েছে। একজন চতুর্থ শ্রেণির শিশু থেকে শুরু করে পোশাক শ্রমিক— কেউই নিরাপদ নয়। আমরা অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের কাছে দাবি জানাই, যেন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।”
আরেক শিক্ষার্থী ভূমিকা সরকার বলেন,
“দেশে যেন ধর্ষণের মহোৎসব চলছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু বিচার মিলছে না। আমরা রাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে আছি, কিন্তু বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের হতাশ করেছে। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই।”
এছাড়া উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. শুচিতা শরমিন এবং ভারপ্রাপ্ত প্রোক্টর ডা. সোনিয়া খান সনি সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো অনেক শিক্ষক।
উপাচার্য ডা. শুচিতা শরমিন বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকে একটা শিক্ষাবান্ধব ক্যাম্পাস হিসেবে দেখতে চাই, সে জন্যে নারী শিক্ষার্থী এবং পুরুষ শিক্ষার্থী উভয়ই সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। শুধু শিক্ষার্থীই নয় শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সিকিউরিটি যারা আছেন সবাই মিলে আমরা ক্যাম্পাসটাকে একটা নিরাপদ ক্যাম্পাস হিসেবে দেখতে চাই এবং এখানে আরো বেশি সিকিউরিটি দরকার সেগুলো স্টাবলিশ করার জন্যে আমরা কাজ করছি।