রুশাইদ আহমেদ: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে দেশের জনগণই সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে বলে মন্তব্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এ কথা বলেন। এক সংবাদকর্মীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরেন।
ট্যামি ব্রুস জানান, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। তবে দেশের অভ্যন্তরে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ বিরাজ করছে। এসব চ্যালেঞ্জ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইতিপূর্বেও একাধিকবার উদ্বেগ ও মতামত প্রকাশ করেছে।
এ সময়, বাংলাদেশে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে ব্রুস বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সংক্রান্ত একটি গুরুতর বিষয় হলো ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া। ট্যামি ব্রুস স্পষ্ট করে বলেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের আদালতের এবং এ নিয়ে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব বাংলাদেশের প্রশাসনের। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করতে চায় না বলেও উল্লেখ করেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র।
তবে মুখ্য যে বিষয়টি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর পুনরায় জোর দিয়ে বলেছে তা হলো, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কেমন হবে, তা একমাত্র ঠিক করবে দেশের জনগণ। তিনি বলেন, “আমরা জানি, বাংলাদেশের মানুষ নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। নির্বাচন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। এটি তুচ্ছ কোনো বিষয় নয়। বরং এর মাধ্যমেই গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হতে পারে।”
ট্যামি ব্রুস আরও বলেন, জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। গত দুই দশকে বিশ্বের নানা দেশে আমরা দেখেছি, ভুল সিদ্ধান্ত কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবনমানকে প্রভাবিত করেছে। কাজেই সঠিক পথ নির্বাচন ও রাজনৈতিক সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক, মানবিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে আসছে। একই সঙ্গে উভয় দেশই বাণিজ্য, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করছে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কিছু উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এসব বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও সংলাপের মাধ্যমে সম্পর্ক আরও উন্নত করার সুযোগ রয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল ও মানবিক বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।