‘বাংলাদেশে জলবায়ু সহনশীল কৃষিকে উৎসাহিত করা: কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) তত্ত্বাবধানে তিন দিনব্যাপী ‘গবেষণা অগ্রগতির বার্ষিক কর্মশালা ২০২৩-২৪’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে কর্মশালাটির উদ্ভোধন অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বাউরেসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাম্মাদুর রহমান।
সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাউরেসের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাভিদুল হক ভূঁঞা ও সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. পরেশ কুমার শর্মা।
অনুষ্ঠানে এবছর শিক্ষকদের এইচ-ইনডেক্স মানের উপর ভিত্তি করে মোট ১৭ জনকে গ্লোবাল রিসার্চ ইম্প্যাক্ট রিকগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ প্রদান করা হবে। এছাড়াও কৃষি উৎপাদনে বিশেষ অবদান রাখার জন্য খামার পর্যায়ের ৫ জন কৃষককে প্রফেসর ড. আশরাফ আলী খান স্মৃতি কৃষি পুরষ্কার-২০২৫ প্রদান করা হবে।
তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালিত গবেষণা প্রকল্প থেকে উন্নত মানের ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালে আর্টিক্যাল প্রকাশ করায় তাদেরকে প্রকাশনা খরচ প্রদান করা হবে। এছাড়াও এবছর কৃষি বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ১ জন সাংবাদিককে কৃষি সাংবাদিকতা অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকদের মধ্যে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি স্বর্ণপদক পুরষ্কার প্রাপ্তির অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরুপ বাউরেস থেকে পাঁচ জনকে গ্লোবাল সায়েন্টিস্ট রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান করা হবে।
২০২৪ সালে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে স্ট্যানফোর্ড-এলসেভিয়ায়ের শীর্ষ ২% বিজ্ঞানীর তালিকায় যেই ৮ জন শিক্ষককে তাদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ বাউরেস থেকে তাদেরকে সম্মাননা-২০২৫ প্রদান করা হবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে ২৩টি টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপিত হবে এবং তা থেকে পরবর্তী গবেষণার পরিকল্পনা করা হবে। পরবর্তীতে সেশন ভিত্তিক বেস্ট ২১ জন উপস্থাপনকারীকে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হবে। এছাড়াও পোষ্টার সেশন মোট ৬ জনকে সেরা পোস্টার উপস্থাপনকারী হিসেবে পুরুস্কৃত করা হবে।
বাউরেস এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ হাম্মাদুর রহমান বলেন, ‘ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কার্যক্রম হচ্ছে শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ। বাউরেস সবসময় রিসার্চারদের সর্বোচ্চ সাহায্য প্রদান করতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সকল গবেষণা বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করতে বাউরেস নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হলেও সর্বপ্রথম বাকৃবিতেই বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা হয়ে আসছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি একান্তভাবেই কৃষি নির্ভর। আমাদের জাতীয় উন্নয়ন তাই কৃষি উন্নয়নের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। জনবল, জমি ও জল -এ ত্রিবিধ সম্পদে বাংলাদেশ অনন্যভাবে সমৃদ্ধ। এ সম্পদের বিজ্ঞানসম্মত ও পরিকল্পিত ব্যবহারের মাধ্যমে এ দেশের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে প্রয়োজন বিজ্ঞান ভিত্তিক কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম সুক্ষ্মভাবে পরিচালনার জন্য ১৯৮৪ সনের ৩০শে আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ১৬১তম অধিবেশনে “বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) অধ্যাদেশ” অনুমোদন লাভ করে।
তখন থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকদের দ্বারা পরিচালিত প্রকল্প-গবেষণা কার্যক্রমের তদারকি, ব্যবস্থাপনা ও পরিবীক্ষণের যাবতীয় দায়িত্ব বাউরেস পালন করে আসছে। তারই ধারাবহিকতায় বাউরেস ৪৫৩৭টি গবেষণা প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করেছে এবং ৬৭৪টি গবেষণা প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আরাফাত/আরইউএস