জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এই বাজেটে বাড়ানো হয়েছে কিছু পণ্যে আয়কর, শুল্ক, ভ্যাট অথবা সম্পূরক শুল্ক।
ফলে বাড়ছে সিগারেট, পানির ফিল্টার, কাজুবাদাম, ফ্রিজ, এসি, আইসক্রিম, বেভারেজ, ইট, এলইডি বাল্ব, তামাকজাতীয় দ্রব্য, অপরিশোধিত ভোজ্যতেল, টিউব লিসেনিং জেল, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, কাচ, প্লাস্টিক, মেডিকেল যন্ত্র, নির্মাণসামগ্রী, সিম কার্ড ইত্যাদি পণ্যের দাম।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন শুরু হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট পড়া শুরু করেন অর্থমন্ত্রী৷
বাজেটের ঘোষণা অনুসারে, সিগারেটের উৎপাদন পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্যস্তর বাড়বে। বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত পানির ফিল্টার আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ে বাসায় ব্যবহ্রত এলইডি বাল্ব এবং এনার্জি সেভিং বাল্ব উৎপাদনের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। খোসা ছাড়ানো কাজুবাদাম আমদানিতে দাম বাড়বে। দেশে ফ্রিজ-এসি উৎপাদনে ব্যবহৃত কম্প্রেসার ও সব ধরনের উপকরণের ভ্যাট এবং শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। তাই এসি ও ফ্রিজের দাম বাড়বে।
সিলিন্ডার ও অন্য যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। জেনারেটর সংযোজন ও উৎপাদনে ব্যবহৃত উপকরণ বা যন্ত্রাংশ আমদানিতে এক শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। তাই বাজারে জেনারেটরের দাম বাড়বে। শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানিতে এক শতাংশ শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। এ তালিকায় আছে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল, শিরীষ কাগজ উৎপাদনে ব্যবহৃত টিউব লিসেনিং জেল, কৃত্রিম কোরান্ডাম, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, কাচ, প্লাস্টিক ইত্যাদি।
ট্যুর অপারেটর যেমন অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, থিম পার্কে মূসক ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফলে বাড়বে ঘোরাঘুরির খরচ। ইটের ক্ষেত্রে কর ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বাড়বে নির্মাণ খরচ। আইসক্রিম ও কার্বোনেটেড বেভারেজের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে দাম বাড়বে আইসক্রিম ও কোমলপানীয়ের। মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহারে দেওয়া সেবার বিপরীতে সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে মোবাইলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়বে।
এবারের বাজেটের মূল দর্শন হলোঃ ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট চলতি বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। টাকার অঙ্কে বাড়ছে ৩৫ হাজার ২১৫ কোটি টাকা।
মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছর ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। জানা যায়, বাজেটের ঘাটতি মেটাতে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার ঋণ নেওয়া হতে পারে।