রুশাইদ আহমেদ: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের উদ্যোগে ‘বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস ২০২৫’ পালিত হয়েছে।
শনিবার (৩ মে) দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি হেয়াত মামুদ ভবনের সামনে হতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলীর নেতৃত্বে র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ অংশ নেন।
র্যালি শেষে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন যাঁরা, তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চাকরির কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। এ ছাড়া অন্যান্য চ্যালেঞ্জ তো থাকেই। তাই সাংবাদিকদের পেশাগতভাবে চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করা গেলে মুক্ত সাংবাদিকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. তাবিউর রহমান প্রধান বলেন, ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ যে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছিল তারই ধারাবাহিকতায় এবার ৩২তম মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগও দিবসটি স্বল্প পরিসরে উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এ সময়, সম্প্রতি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের জমা দেওয়া প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে তা দেশে মুক্ত সাংবাদিকতা চর্চার পথকে আরও মসৃণ করবে বলে আমার মনে হয়। তবে এটা যেন শুধু রিপোর্ট হিসেবেই সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবে রূপ নেয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
একই বিভাগের শিক্ষক মো. মাহামুদুল হক বলেন, গাজা থেকে শুরু করে বিশ্বের সর্বত্র সাংবাদিকরা আজ নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। আর্থিক ঝুঁকিতেও ব্যাপক হারে সাংবাদিকেরা ভুগে থাকেন।
তিনি যোগ করেন, সেই পরিপ্রেক্ষিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের ব্যবহার তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক নানা দিক হতে সহায়তা করলেও সার্বিকভাবে পেশাগত কিছু দিক হতে আশঙ্কা তৈরি করছে। তবে এখনও সাংবাদিকেরা পেশাগতভাবে গোটা বিশ্বেই তথ্যপ্রবাহ যেভাবে সচল রেখেছেন তাতে এআই খুব সহজেই সাংবাদিকদের জায়গা কেড়ে নিতে পারবে না বলেও আশা করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, দেশের প্রতি গণমাধ্যমের যে সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে তা সবসময় যেন অক্ষুণ্ণ থাকে সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। গণমাধ্যমের সঙ্গে পেশাগতভাবে যুক্ত ব্যক্তিরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
উপাচার্য আরও বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের গণমাধ্যমগুলো তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে বলেই এই আন্দোলন সফল হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে বেরোবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরাও মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের বার্তাকে কেন্দ্র করে তাদের পেশাগত তথা সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন উপাচার্য। পাশাপাশি, বিশ্বের কাছে দেশ ও জাতির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে দেশের সকল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান ড. শওকাত আলী।