রুশাইদ আহমেদ: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) অনুষ্ঠিত হওয়া ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সমন্বিত কৃষি গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষকদের উপস্থিতিপত্রে ভুলবশত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লোগো মুদ্রিত হওয়ায় আলোচনার জন্ম হয়েছে। তবে নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই কর্তৃপক্ষ ত্রুটি সংশোধন করে বলে জানা যায়।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকালে কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি হেয়াত মাহমুদ ভবনে পরীক্ষার রিজার্ভ ডিউটির দায়িত্ব পাওয়া শিক্ষকদের ওই তালিকায় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগের অধ্যাপক ড. আপেল মাহমুদ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মাদ ইলিয়াস, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আমিনুল ইসলাম এবং পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক আল রাফাতের নাম উল্লেখ ছিল।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পরীক্ষার দিন কবি হেয়াত মামুদ ভবনের রিজার্ভ ডিউটিতে থাকা শিক্ষকদের যে তালিকা প্রণয়ন করা হয় তার ওপরের দিকে ডানপাশের কোণায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শত বর্ষের লোগো মুদ্রিত ছিল। দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষক সেই তালিকাটিতে স্বাক্ষর করার পর বিষয়টি নজরে এলে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ফলে তৎক্ষণাৎ তাঁরা উক্ত তালিকা প্রণয়নকারী কমিটির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তালিকাটি সংশোধন করে সেখান হতে বিতর্কিত লোগোটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে রংপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব রহমত আলী বলেন:
❝শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী পালন আওয়ামী ফ্যাসিবাদ কায়েমের এক অন্যতম প্রতীক। তাই ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশে সেই প্রতীকের ব্যবহার অনিচ্ছাকৃতভাবে করাও একেবারেই কাম্য নয়। এ ক্ষেত্রে যথাযথ তদন্ত করে সঠিক তথ্য উদঘাটন জরুরি বলে আমি মনে করি।❞
উক্ত তালিকা প্রণয়নকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরীফ উদ্দীন এই বিষয়টিকে একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল হিসেবে উল্লেখ করেন।
মো. শরীফ উদ্দীন বলেন:
❝সাধারণত মেজর ভর্তি পরীক্ষাগুলোর সময় আমাদেরকে অনেক কাজ একসঙ্গে করতে হয়। তবু আমরা সবসময় চেষ্টা করি যেন কোনো ভুল না হয়। এরপরও যে এই ঘটনাটি ঘটেছে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমার ধারণা, অসতর্কতাজনিত কারণে তালিকাগুলো মুদ্রণের সময় পূর্বের কোনো কাগজ ঢুকে গিয়ে থাকতে পারে।❞
তিনি আরও বলেন, পূর্বের কোনো (ড্রাফট) ফাইল ব্যবহারের কারণেও এটা হয়ে থাকতে পারে, কারণ তার হেডারের রং সাধারণত ধূসর হয়ে থাকে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের আরও খেয়াল করা উচিত ছিল। তাই এ ঘটনা ঘটায় আমরা লজ্জিত।
শরীফ উদ্দীন যোগ করেন, তবে বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আমরা তালিকাটি প্রত্যাহার করে নিই। পুনরায় সংশোধনের পর সেটা আবার সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়ে দিই আমরা। এ ধরনের অনিচ্ছাকৃত ভুলের প্রসঙ্গে পরবর্তীতে আমরা আরও সতর্ক হবো।