সম্প্রতি আওয়মীলীগের সরকারের পতনের পর একে একে বেরিয়ে আসছে নামী প্রতিষ্ঠানগুলোর কু-কীর্তি। বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম। অপরাধে জর্জরিত ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটির সম্পর্ক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর মন্তব্য করেছেন,‘পৃথিবীতে এস আলমের মতো কেউ ব্যাংক লুট করেনি। বাংলাদেশের একাধিক ব্যাংকে প্রায় এক লাখ কোটি টাকার মতো ঋণ রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের।
এর মধ্যে কেবল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছ থেকেই প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে। শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় এবং লাভজনক আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিবেচনা হওয়া ইসলামী ব্যাংক। এস আলম এর নিয়ন্ত্রণ নেয় ২০১৭ সালে। ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও গ্রুপটির মালিকানা আরও পাঁচটি ব্যাংক রয়েছে। সেগুলো হলো: সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং কমার্স ব্যাংক।
গ্রুপটির চরম দূর্নীতির ফলে রীতিমত তারল্য, তথা নগদ টাকার সংকটে পড়ে যায় ব্যাংকগুলোতে। ছয়টি ব্যাংকের বাইরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জনতা ব্যাংক থেকেও প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছে এস আলম পরিবার যা ব্যাংকের মোট মূলধনের প্রায় ৪২০ শতাংশ।বাংলাদেশের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে যে, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে কমপক্ষে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
এছাড়া এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। সাবেক সরকারের পতনের পর এর সাথে সরাসরি যুক্ত ব্যাক্তিদের প্রায় সকলেই যখন আত্মগোপনে তখন আওয়ামীলীগের ছত্র-ছায়ায় দূর্নীতি চালিয়ে যাওয়া এস আলম এখনো নানানভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।
গত (১১ আগস্ট) রবিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলের দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত অবস্থায় সাধারন কর্মচারীদের ওপর হামলা করে এস আলম বাহিনী। এতে ব্যাংকের ছয় জন কর্মকর্তা-কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়াও ৩০ আগস্ট দিবাগত রাতে চট্টগ্রামে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি বিএনপি নেতাদের পাহারায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও এখনো কোনো মাধ্যমেই এস আলমের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।