ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। এতে কমপক্ষে আরও ২৫ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে।
সোমবার (১৭ জুন) স্থানীয় সময় সকাল নয়টার দিকে নিউ জলপাইগুড়ির রাঙাপানি রেলওয়ে স্টেশনের নিকটে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও হিন্দুস্তান টাইমস। এতে কলকাতা-শিলিগুড়ি রুটে রেল চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসামের শিলচর হতে ছেড়ে আসা কলকাতার শিয়ালদহগামী যাত্রীবাহী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রাবিরতি শেষে রাঙাপানি স্টেশনের কাছে পৌঁছালে পেছন থেকে অকস্মাৎ একটি মালবাহী ট্রেন এসে ধাক্কা দেয়। এতে কাঞ্চনজঙ্ঘার দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে লাইনের পাশে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই পাঁচজন প্রাণ হারান এবং গুরুতরভাবে আহত হন আরও কমপক্ষে ২৫ জন।
ভারতের সরকারি সংবাদমাধ্যম প্রেস ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) বলছে, শিলিগুড়িতে সকাল থেকেই অব্যাহত ভারি বৃষ্টিপাতের মধ্যে নয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ কারণে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনায় বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের।
এ বিষয়ে দার্জিলিং জেলার কুরসেওং থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় বলেন, দুর্ঘটনায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালকসহ পাঁচ ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। আরও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ ট্রেনে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করছে বলে জানান তিনি।
এ দুর্ঘটনার পরপরই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ব্যকৃতিগত ওয়ালে শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করে এক পোস্টে লেখেন, দার্জিলিংয়ের ফাঁসিদেওয়া এলাকায় ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমি গভীর মর্মাহত। বিস্তারিত জানতে না পারলেও কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে একটি মালবাহী ট্রেন ধাক্কা দিয়েছে বলে শুনেছি। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে স্থানীশলয় জেলাশাসক, এসপি, চিকিৎসক এবং অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালনায় উদ্ধারকাজ চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে শিলচর ও আগরতলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটির কোনো অফডে নেই। দার্জিলিং যাওয়ার জন্য পর্যটকদের কাছে এই ট্রেন সর্বদা পছন্দের ওপরের সারিতে থাকে। তবে এমন সময় এই দুর্ঘটনাটি ঘটল, যখন কলকাতা ও দক্ষিণের আশপাশের শহরগুলো থেকে প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে বাঁচতে ব্যাপক হারে দার্জিলিং যেতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।
প্রাথমিকভাবে মালবাহী ট্রেনকে দেওয়া সংকেত অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ট্রেনচালক ট্রেন না থামানোয় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।