ভারতের উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদ শহরের একটি অভিজাত এলাকায় নতুন বাড়ি কিনলেও, মুসলিম চিকিৎসক দম্পতিকে প্রতিবেশীদের বাধার মুখে ওই বাড়িতে উঠতে দেওয়া হয়নি।
প্রতিবেশীরা দাবি করেন, এলাকাটি হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ায় অন্য ধর্মের কাউকে সেখানে বসবাস করতে দিতে চান না।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। ভিডিওতে প্রতিবেশী মেঘা অরোরাকে বলতে শোনা যায়, “মন্দিরের সামনে মুসলিম পরিবার থাকলে তা নারীদের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।”
বাড়িটির আগের মালিক ড. অশোক বাজাজ জানান, দম্পতি শেষ পর্যন্ত বাড়িটি পুনরায় এক হিন্দু পরিবারের কাছে বিক্রি করতে রাজি হয়েছেন। তবে এ ঘটনায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের শহরের পরিবেশ এমন হবে তা কখনোই ভাবিনি।”
বিশেষজ্ঞদের অভিমত
ঘটনাটিকে ভারতের ধর্মীয় মেরুকরণের একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তানভীর আইজাজ বলেন, “এটি সংবিধানবিরোধী এবং মানুষের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। শহরাঞ্চলেও এখন এই মেরুকরণ দৃশ্যমান হচ্ছে।”
সামাজিক মাধ্যমে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সংসদ সদস্য জন ব্রিটাস এক্সে লেখেন, “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য আমাদের গর্বের জায়গা। কিন্তু এমন ঘটনা লজ্জাজনক।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিজেপি শাসনামলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের ঘটনাগুলো বেড়েছে। মোরাদাবাদের এই ঘটনা শুধু একটি বাড়ি নিয়ে বিরোধ নয়; এটি ভারতের ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রতিফলন, যা সংবিধানের মৌলিক মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ করে।
আরএস