আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে ‘পদত্যাগের’ হিড়িক পড়েছে৷ ব্যতিক্রম নয় শিক্ষা সেক্টরও৷ কিছু ‘স্বেচ্ছায়’ পদত্যাগের ঘটনা ঘটলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্যাতন করে জোরপূর্বক পদত্যাগের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসব শিক্ষকেরা সরাসরি সমর্থন দেননি সেসব শিক্ষদের প্রতি শিক্ষার্থীদের এমন অমানবিক আচরণ।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের অফিস কক্ষ ঘেরাও করেছে পদত্যাগের দাবিতে। এছাড়াও এমন সব ভিডিও সামাজিক মাধ্যমগুলোতে দেখা যাচ্ছে, যেখানে শিক্ষকদের সাথে হাতাহাতি পর্যায়ে চলে গেছেন শিক্ষার্থথীরা, এসব আচরণ শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের পরিচয় প্রদান করে। এতে করে অনেক শিক্ষকের মধ্যেই এখন ভয় এবং আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সম্প্রতি নওগাঁয় শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের চাপের মুখে পদত্যাগ করার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন নওগাঁর হাঁপানিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নুরুল ইসলাম। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই দিন চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দুই দিন চিকিৎসার পরেও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি, বরং আরও অবনতির কথা জানিয়েছেন স্বজনরা।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্লেষকদের দাবি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর অভ্যন্তরীন বিবাদ এর পেছনে অনেকখানি দায়ী এর সাথে ক্ষমতার লোভেও অনেকে শিক্ষার্থীদের এসব অমানবিক কাজে ইন্ধন যোগাচ্ছে বলে ধারণা করা যাচেছ।
এ বিষয়ে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। যেখানে তিনি বলেছেন কোনো শিক্ষক যদি কোনো নির্দষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে শিক্ষার্থীদের নির্যতন অথবা হামলা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক। তিনি অন্তরবর্তী সরকার এবং প্রশাসনের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন, যেসব গুটিকতেক শিক্ষার্থীরা এভাবে শিক্ষকদের অসম্মান করছে তার পেছনের কারণ তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে।
কয়েক বছর আগেও আমাদের সমাজের চিত্র এমন ছিল না। শিক্ষক বলতেই তিনি সর্জন সম্মানিত ব্যাক্তিত্ব। শিক্ষা যদি জাতির মেরুদন্ড হয় তাহলে শিক্ষক হলেন জাতি গঠনের কান্ডারি। তার সাথে কেন এমন বিরুপ আচরণ?