মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, যিনি পূর্বে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য ছিলেন, গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর থেকে সিংগাইরের চরদুর্গাপুরে ভাইয়ের বাড়িতে টানা তিন মাস আত্মগোপনে ছিলেন। এই সময়ে তিনি একবারের জন্যও ওই বাড়ির বাইরে যাননি।
তার বড় ভাই এবারত হোসেন সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে জানান, “শিল্পী আপা ৬ আগস্ট থেকে পরবর্তী তিন মাস আমার বাড়িতেই ছিলেন। এ বিষয়ে আমার স্ত্রী ও সন্তান ছাড়া আর কেউ জানত না। এলাকার কারও সঙ্গে তার কোনো সরাসরি যোগাযোগ ছিল না, কেউ কিছু জানতে চাইলে আমার মাধ্যমেই জানত।”
জানা গেছে, আত্মগোপনের সময় তিনি মোবাইল ফোন ব্যবহার একেবারে বন্ধ করে দেন এবং বাহ্যিক যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন রাখেন। ভাই এবারতের বাড়ি ও আশপাশের এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকায় বাইরের কেউ সহজে প্রবেশ করতে পারেনি।
পরে তিনি তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নিপার সহায়তায় ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানেই আশ্রয় নেন। গোপনে এক রাতে বোরকা পরে সিংগাইর থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকা চলে যান। গাড়ির জানালা ছিল কালো রঙের, যাতে কেউ তাকে চিনতে না পারে।
এ সময় নিপাই মমতাজের দেখভাল করতেন, আর তার খরচের দায়ভার নিতেন ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) জুয়েল। জানা যায়, বর্তমানে মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকায় মমতাজের নামে থাকা একটি পাঁচ তলা বাড়িও জুয়েলের দখলে রয়েছে। যদিও এ বিষয়ে জুয়েলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।
মমতাজের তৃতীয় স্বামী ডা. এসএম মঈন হাসান গণমাধ্যমকে জানান, তিনি দীর্ঘ সময় ধরেই মমতাজের সঙ্গে যোগাযোগে নেই এবং মমতাজ কিছুদিন তার সাবেক স্বামী রমজান আলীর মেয়ের বাসায়ও ছিলেন। তবে এই তথ্য নিয়ে সংশয় রয়েছে, কারণ রমজানের এক আত্মীয় এই দাবি অস্বীকার করেছেন।
মমতাজ বর্তমানে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়ে চার দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। এ বিষয়ে সিংগাইর থানার ওসি জানান, তিনি থানায় নতুন যোগ দিয়েছেন এবং মমতাজের আত্মগোপনের বিষয়টি তার জানা নেই।