হঠাৎ এক শ্রাবণ সন্ধা খোঁজে
আধার ঘনত্ব মুছে
গোধূলি রংধনু কেল্লায়
তুমার আসার খবর আসে- মা
আমি শুনতে পাই।
ছোট্ট কুঁড়ের পইঠা বসন কোনে
নলি মুখে এক বেলায়
টিপটিপ আলো পরিণত কালো
বিষাক্ত -বিবশ- ছাই;
ঐ ছাই হতেই দেখি তোমায়-মা
সত্য দিন কল্পনায়।
সহসা তড়িৎ পথরোধ উঠোনে
শত ভান-ভঙ্গি-শঠতায়
দু-গালে চুমু আর দু থলে গুজা
কষ্ট ভুলানো ভেলায়
কড়ই গাছের শেষ ঢাল হতে- মা
স্মৃতিগুলো ভেসে যায়।
সুজলা হরিৎ বিশীর্ণ মুখ ভেঙে
কত রাগ-টাক -অনীহায়
এপাশ-ওপাশ ঘ্রাণহীন পোকা
ব্যর্থ-বিরক্ত- কান্নায়
জীর্ণ বেড়ার ভাঙ্গা ফাঁক হতে-মা
দৃশ্যপট সব পাল্টায়!
ভরসা জোগানো স্কুল -চর পথে
হাটি-চলি-ফিরি -গান গাই
মেঘলা অম্বরে বৃষ্টি সম্বরে
হাঁফছাড়া খুশি বন্যায়
অভাব তবুও একটি ডাক – মা
কই রে খোকা চল-খেতে-আঁয়!
বহতা নদীর পেঁচান তরঙ্গ লয়ে
একতা চিন্তা; বাণী পাঠ গাই
মৃত স্রোত হাসে মৃদুতায় ভাসে
তোমার সন্দেশ আশায়
পিছুটান চেয়ে নিরবে শুনি মা
তুমি ফিরে আসনাই!
চন্দ্রিমা রাতে জ্যোৎস্না সাথে
যাই-আসি-যাই কবরতলায়
নির্বাক চারপাশ,সুনসান ঝোপঝাপ
লুকিয়ে তুমি; খুঁজা বৃথা দায়
ঝংকার কান শুনে পদ গান -মা
খুঁজে তোমা নাহি পাই!
একলা দুপুরে ধূলিময় বিস্বাদে
ছাপ -চিহ্ন লাগা বারান্দায়
জমা সুর স্মৃতি কবিতারা ইতি
নিস্তেজ-অচল;ব্যস্ত-মহড়ায়
অপেক্ষায় উদাস থাকি তবু- মা
তোমার সন্ধান নাহি পাই!
জানালা গেষে মগ্নতা আস্বাদে
ছবি -খাম স্তপীকৃত খাতায়
মৌমাছি সাজে তুমা রূপ-বেশে
ভুলি গত-চ্যুত;ভূত ভাবনায়
লক্ষ্যভ্রষ্ট তীর হয়ে থাকি তবু-মা
তুমার ঠিকানা নাহি পাই!
হঠাৎ কালে-ভদ্রে একবেলায়
বাস্তবতা বিদায় জানায়ে
তুমি দূর বহু কামড়ায়
সমস্ত জীবনের পথ খেকে সরে- মা
পাড়ি পর- জামানায়।
সেদিন থেকে দিনগুলো কাটে
অজানা শত আশায়
অবজ্ঞা তাপে জ্বলে পুড়ে মরে
অজস্র-ক্ষত বুকটায়।
তুমার পথে উঁকি মেরে থাকি মা
তুমার খুঁজ নাহি পাই।#
লেখক : জুয়েল রানা
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।