মাগুরায় ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার আট বছরের এক শিশুর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, শিশুটির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে হচ্ছে।
শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, শিশুটির যৌনাঙ্গে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং গলায় গভীর ক্ষত দেখা গেছে। তার চিকিৎসার জন্য গাইনি ও অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাতে শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে গাইনি বিভাগ থেকে শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
শিশুটির মামাতো ভাই জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তার জ্ঞান ফেরেনি। চিকিৎসকদের মতে, শিশুটিকে অন্তত ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
জানা গেছে, মাগুরা শহরে বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে শিশুটি ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, তাদের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায়। কয়েক দিন আগে সে তার বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে তার বোনের শাশুড়ি শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভাষ্যমতে, শিশুটির শরীরে আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে, গলায় আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে, যা শ্বাসরোধের চেষ্টার ইঙ্গিত দেয়। এছাড়া, যৌনাঙ্গে গুরুতর ক্ষত এবং রক্তক্ষরণ দেখা গেছে।
মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী জানান, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি ধর্ষণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এখনো শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ঘটনার তদন্তের অংশ হিসেবে শিশুটির দুলাভাই ও তার শ্বশুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শুক্রবার জুমার নামাজের পর মাগুরা সদরে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ করে এবং থানার সামনে অবস্থান নেয়। তারা অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।