নীলফামারীর ডিমলায় পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মনসার উদ্দিনের বিরুদ্ধে। কিন্তু এ বিষয়ে মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর দিনমজুর পিতা। তিনি বলেছেন, আমি খুবেই গরিব মানুষ। এটা নিয়ে মামলা করলে আমাদের আরও ক্ষতি হতে পারে। তারা অনেক প্রভাবশালী।
ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মনসার উদ্দিন (৬৫) ওই এলাকার বালাপাড়া নিউ মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার বাবার দিনমুজুরির পাওনা টাকা আনতে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির বাড়িতে যায় ওই স্কুলছাত্রী। সেখান থেকে ফেরার পথে ওই ছাত্রীর মুখ চেপে পাশের ভুট্টাখেতে নিয়ে যান প্রতিবেশী মনসার উদ্দিন। এরপর মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি দেখান। পরে মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে তার দাদিকে বিষয়টি জানায়। ঘটনার পর থেকে মনসার আলী পলাতক।
এ ঘটনার পর স্কুলছাত্রীর বাবা বিচার পেতে স্থানীয় গণ্যমান্যদের মৌখিকভাবে বিচার দিলেও থানায় মামলা করতে পারেননি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা জানান নিজের অসহায়ত্বের কথা। তিনি বলেন, ‘আমি খুবেই গরিব মানুষ। মামলা চালানোর সামর্থ্য নেই। তাই বিচার পেতে গ্রামবাসীকে জানিয়েছি। এটা নিয়ে মামলা করলে আমাদের আরও ক্ষতি হতে পারে। তারা অনেক প্রভাবশালী।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় স্কুলছাত্রীর পরিবার ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছে। একটি চক্র সালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করিয়ে দেওয়ার কথা বলে মামলা করতে বাধা দিচ্ছে। তাই আমরাও তেমন কিছু করতে পারছি না। স্থানীয় ইউপি সদস্য মহসিন আলম বলেন, ‘ওই স্কুলছাত্রীর বাবা মৌখিকভাবে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। ঘটনা শোনার পর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’
ডিমলা থানার তদন্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযোগ পাইনি। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি। ওই স্কুলছাত্রী ও তার বাবার সঙ্গে পুলিশ কথা বলেছে। ভুক্তভোগী পরিবারকে সকল প্রকার আইনি সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তারা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মনসার উদ্দিনের বাড়ি গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যরা কোনো কথা বলতে রাজি না। মনসার উদ্দিনের মোবাইল নম্বর চাইলে পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘তিনি (মনসার উদ্দিন) মোবাইল ব্যবহার করেন না।’