জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম শিক্ষা উপদেষ্টা নন, এমনকি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিসংক্রান্ত কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সঙ্গেও তাঁর প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই। তবুও তিনি ছাত্র-জনতার প্রতিনিধি হিসেবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। এমন একজন ব্যক্তি যখন রাজপথে এসে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করেন, তখন তাঁর সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, তা অনভিপ্রেত এবং নিন্দনীয়।
বুধবার (১৪ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে সারজিস আলম এসব মন্তব্য করেন।
তিনি লেখেন, আগেই কিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি—এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কথা ছিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রতি। অথচ যারা বিষয়টির সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাঁদের আক্রমণের শিকার হতে হলো।
পোস্টে সারজিস আরও জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তৎক্ষণাৎ মাহফুজ আলমকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর মাহফুজ আলম রাত ৯টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন এবং পরদিন শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন। এমনকি সমস্যা সমাধান না হলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গেও শিক্ষার্থীদের কথা বলিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তবুও শিক্ষার্থীরা নিজস্ব সিদ্ধান্তে কর্মসূচি চালিয়ে যান।
সারজিস আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা জনসম্পৃক্ততাকে ভয় পান। তাই সরাসরি সংশ্লিষ্ট না হলেও ছাত্র-জনতার সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব অন্য উপদেষ্টাদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আগের আন্দোলনগুলোও যৌক্তিক ছিল। সেই দাবিগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়াই বর্তমান বিক্ষোভের কারণ। এজন্য মূল দায় বর্তমান সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকারের নেতৃত্বে এমন ব্যক্তি কাম্য নয়, যারা চাপ ছাড়া কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন না।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির আওতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে সেখানে যান তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বক্তব্যে তিনি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি সংহতি জানালেও, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের উত্তেজনার মুখে পড়েন। একপর্যায়ে তাঁর মাথায় পানির বোতল ছোড়া হয়। এরপর তিনি বক্তব্য বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।