সারা দেশের উন্নয়নধারায় এক নতুন অধ্যায় যুক্ত হতে যাচ্ছে চীনের সহায়তায় বাংলাদেশে নির্মিতব্য তিনটি ‘ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’-এর মাধ্যমে। উন্নত চিকিৎসা, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং স্বল্পমূল্যের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এই হাসপাতালগুলো গড়ে তোলা হবে দেশের তিনটি নির্ধারিত স্থানে। তবে, তালিকায় নেই মৌলভীবাজার — বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন জেলার সচেতন নাগরিকরা।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ছবিতে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতালের স্থাপত্যরূপ দেখিয়ে লেখা রয়েছে: “মৌলভীবাজারবাসী আওয়াজ তুলুন — চীনের প্রস্তাবিত ৩টির মধ্যে একটি হাসপাতাল মৌলভীবাজারে চাই।” এই দাবির পক্ষে এক কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছেন সাধারণ মানুষ, তরুণ সমাজ, চিকিৎসাসেবার সঙ্গে জড়িত পেশাজীবী এবং প্রবাসীরা।
কেন মৌলভীবাজারে হাসপাতাল প্রয়োজন?
১. চিকিৎসা সেবার ঘাটতি: মৌলভীবাজারে এখনো কোনো আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক হাসপাতাল নেই। জটিল রোগে আক্রান্তদের সিলেট বা রাজধানী ঢাকায় চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয়, যা সময়, অর্থ এবং জীবন — তিনটিরই ঝুঁকি বাড়ায়।
২. প্রবাসী নির্ভর জনপদ: মৌলভীবাজার বাংলাদেশের অন্যতম প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার মানুষ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। সেই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা তাঁদের ন্যায্য দাবি।
৩. ভূগোল ও পর্যটন: চা-বাগান ও পাহাড়ি সৌন্দর্যে ঘেরা মৌলভীবাজার জেলার ভৌগোলিক গুরুত্বও যথেষ্ট। এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হলে, তা চিকিৎসা পর্যটনের (medical tourism) সুযোগও তৈরি করবে।
জনগণের প্রত্যাশা ও আহ্বান:
মৌলভীবাজারবাসী এখন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। তাঁদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশ-চীন মৈত্রীর প্রতীক হিসেবে এই জেলায়ও একটি ‘ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’ নির্মিত হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে ইতোমধ্যেই আহ্বান জানানো হয়েছে — বিষয়টি যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয়।
একজন স্থানীয় শিক্ষক বলেন, “আমাদের এলাকায় এত প্রবাসী, শিক্ষিত তরুণ ও বৃদ্ধ জনগোষ্ঠী — কিন্তু নেই একটি ভালো মানের হাসপাতাল। যদি চীনের সহায়তায় এমন একটি হাসপাতাল হয়, তাহলে আমাদের জীবনমান অনেক উন্নত হবে।”
শেষ কথা:
মৌলভীবাজারে একটি ‘ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠার দাবি এখন সময়ের অনিবার্য দাবি হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায় — সর্বত্রই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে এই বিষয়টি। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এ দাবিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন, তবে এটি হবে মৌলভীবাজারবাসীর বহুদিনের স্বপ্নপূরণের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।