রুশাইদ আহমেদ || সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্যসচেতনতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তবে বর্তমানে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার কারণে উচ্চ কোলেস্টেরল একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোলেস্টেরল মূলত রক্তে থাকা এক ধরনের চর্বি। এটি দুই ধরনের হতে পারে—ভালো কোলেস্টেরল (HDL) ও খারাপ কোলেস্টেরল (LDL)।
ভালো কোলেস্টেরল শরীরের জন্য উপকারী হলেও, অতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টেরল রক্তনালিতে জমে ধমনি ব্লক হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এটি দীর্ঘমেয়াদে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকসহ নানা জটিলতার কারণ হতে পারে। তাই সময়মতো এর লক্ষণ চিহ্নিত করা জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্বকেই কোলেস্টেরলের মাত্রা সম্পর্কে অনেক কিছু প্রকাশ পায়।
নিচে ত্বকের কিছু পরিবর্তনের উল্লেখ করা হলো, যা উচ্চ কোলেস্টেরলের ইঙ্গিত দিতে পারে—
ত্বকে উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ
১. চোখের চারপাশে হলুদ দাগ
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে চোখের আশপাশে হলুদ বর্ণের আস্তরণ বা দাগ দেখা যেতে পারে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে জ্যানথেলাসমা নামে পরিচিত। এটি মূলত ত্বকের নিচে চর্বি জমার ফলে হয়।
২. ত্বকের রঙের পরিবর্তন
রক্ত সঞ্চালনে ব্যাঘাত ঘটলে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে ত্বকের রং হলুদ বা কালচে হয়ে যেতে পারে। যদি এমন পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, তাহলে কোলেস্টেরল পরীক্ষা করানো উচিত।
৩. শুষ্ক ত্বক ও সোরাইসিসের সমস্যা
উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং সোরাইসিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে হাইপারলিপিডেমিয়া বলা হয়। এটি শুধু মৌসুমি শুষ্কতা নয়, বরং কোলেস্টেরলের একটি লক্ষণ হতে পারে।
৪. ত্বকে নীল বা বেগুনি দাগ
হাত, পা বা মুখে নীল বা বেগুনি দাগ কিংবা জালের মতো আকৃতি দেখা গেলে তা উচ্চ কোলেস্টেরলের সংকেত হতে পারে। এটি রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হওয়ার কারণে ঘটে, যা অবহেলা করা উচিত নয়।
৫. ত্বকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া
অতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টেরলের কারণে ত্বকে অস্বাভাবিক চুলকানি ও জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ফোলাভাবও দেখা দিতে পারে।
করণীয় কী?
যদি এসব লক্ষণ দেখা যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও সুস্থ জীবনযাত্রা অনুসরণ করে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ত্বকের পরিবর্তনকে অবহেলা না করে সচেতন থাকাই ভালো।