বিশেষ প্রতিনিধি: রাজধানীর গুলশান ও বনানী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তের পর থেকে পরিবহন খাতের পরিস্থিতি অস্থির হয়ে উঠেছে। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে বেশ কিছু চালক গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনে নেমেছেন। আন্দোলন চলাকালে চালকদের একাংশ বিক্ষোভের নামে সহিংসতা শুরু করেন, যা স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) বনানী ১১ নম্বর রোডে চালকদের আন্দোলন চলাকালে একাধিক ব্যক্তি লাঠিপেটার শিকার হন বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যারা ভিডিও বা ছবি ধারণ করছিলেন, তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এমনকি মোটরসাইকেল চালকরাও এই হামলা থেকে রেহাই পাননি। বিভিন্ন স্থানে বাইকার ও প্যাডেলচালিত রিকশাচালকদের মারধরের ঘটনাও ঘটেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গুলশান সোসাইটির অনুমোদিত রিকশাগুলোই সাধারণত গুলশান এলাকায় যাত্রী পরিবহন করে থাকে। তবে সম্প্রতি অননুমোদিত ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এলাকায় যানজট, ছিনতাই এবং চাঁদাবাজির মতো অপরাধ বেড়েছে। এই কারণে গুলশান সোসাইটির পক্ষ থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু রিকশাচালকরা এই সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন।

বিক্ষোভের নামে গুলশান-বনানীর বিভিন্ন প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন তারা। এমনকি কয়েকটি ঘটনায় বিদেশি নাগরিকদেরও হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলিতে দেখা যায়, কিছু চালক লাঠি হাতে পথচারী বা বাইকারদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী সমাজও এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। বনানী ২১ নম্বর রোডে দুইজন প্যাডেলচালিত রিকশাচালককে ধরে খালের পাশে ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনার কারণে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে জানান, পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে চেষ্টা করছে। আন্দোলনকারী চালকরা যেকোনোভাবে ভিডিও ধারণকারীকে টার্গেট করে লাঠিপেটা করছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও নগর পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে একদিকে আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে, অন্যদিকে পরিবহন শ্রমিকদের দাবিও মানবিকভাবে বিবেচনা করা হয়।