ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নেটওয়ার্কের মৌন মিছিল হয়েছে। এতে অংশ নেন স্কুল-কলেজের কিছু শিক্ষার্থী। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে টেনেহিঁচড়ে আটকের চেষ্টা করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ জোহা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আমরা মৌন মিছিলে সংহতি জানিয়ে অংশ নিতে আসি। তাছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি পালনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেই। কিন্তু পুলিশ আমাদের ওপর হামলা করে, টেনেহিঁচড়ে ২ জনকে আটক করে নিয়ে গেছে। এই বর্বরতার বিচার চাই, শিক্ষার্থীদের মুক্তি চাই। ছাত্র হত্যার বিচার চাই। স্বাধীন দেশে কথা বলা আমাদের মৌলিক অধিকার।
জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘রেমেমবারিং আওয়ার হিরোস’ কর্মসূচি পালনে অবস্থান নেন। তখন পুলিশ বাধা দিলে কেন্দ্রীয় মনজিদ সংলগ্ন প্রাচীর টপকে ক্যাম্পাসে ঢোকেন স্কুল-কলেজের প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী। পরে শহিদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের মৌন মিছিলে যোগ দেন তারা। মিছিল শেষে চলে যাওয়ার আগ-মুহুর্তে হঠাৎ ইউনিফর্ম ছাড়া কিছু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শিক্ষার্থীদের টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। তখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের বাধা দেন এবং ছাড়িয়ে আনেন। পরে তাদের নিরাপদে ক্যাম্পাস ত্যাগে সহায়তা করেন। এ সময় ক্যাম্পাসের সাংবাদিকদের উপরও চড়াও হন পুলিশ।
তাছাড়াও দুইজন সাংবাদিকও পুলিশের হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন,দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের বিভাগীয় প্রধান আমজাদ হোসেন ও সমকাল পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি অর্পণ ধর।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানান শিক্ষক নেটওয়ার্ক।
এ ব্যাপারে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সেলিম রেজা নিউটন বলেন, শিক্ষার্থীদের চেঙঝোলা করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। কারা এরা! আমরা জবাব চাই। এটা কোন ফোর্স? এটা কি কোন বৈধ বাহিনী? এটা কোন বৈধ সরকারের আচরণ হতে পারে? দেশে তো সামরিক আইন জারি হয়নি। সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল, তারা এটা করতে নিষেধও করেছে। কিন্তু এই সাদা পোশাকধারী এরা কারা? দিনেদুপুরে একটা ছেলেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে! গণতান্ত্রিক এই দেশে শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলার অধিকার তো আছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন বলেন, দেশে একটা নির্মম হত্যাকাণ্ড হয়ে গেছে। এটার দায় সরকার ও সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর। এখনো যে তামাশা হচ্ছে, সেটাও অন্যায়। সরকার রাজনৈতিক কোন সমাধান করছে না। এগুলো চক্রান্ত বলে হাজার হাজার মানুষের মুখ বন্ধ করা যাবে না।
দীন ইসলাম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়