দেশের ৩৪তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবিপ্রবি)। একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর প্রায় ১০ বছরে দুইজন অধ্যাপক উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর দশ বছর পার হলেও নানা সংকটে জরাজীর্ণ রাবিপ্রবি এখন উপাচার্য বিহীন দিন পার করছে। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅর্ভূথ্যানের পরে ২য় উপাচার্যের পদত্যাগের পরে কার্যত ভেঙ্গে পরে সব কার্যক্রম। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে উপাচার্য পেলেও রাবিপ্রবি এখনো উপাচার্য বিহীন। উপাচার্য নিয়োগের দীর্ঘসূত্রতার জন্য রাবিপ্রবিয়ানদের রীতিমতো আন্দোলনে নামতে হয়। নতুন উপাচার্য নিয়োগ ও তার প্রতি আশা-আকাঙ্ক্ষা, চাওয়া-পাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন রাবিপ্রবিয়ানরা। সেসব কথা তুলে ধরছেন রাবিপ্রবি প্রতিনিধি মোঃ আয়নুল ইসলাম।
“রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে আমি একজন অসাম্প্রদায়িক ও শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য চাই ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংকট দ্রুততার সাথে নিরসন করবেন । যিনি অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে একাডেমিক মান উন্নয়ন, গবেষণা প্রসার, এবং শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন। আর পাশাপাশি প্রশাসনিক দক্ষতা, নৈতিকতা এবং নিরপেক্ষতার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন করবেন।” (নাসির উদ্দিন অর্ণব,শিক্ষার্থী,ম্যানেজমেন্ট বিভাগ)
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় চাকমা বলেন, “উপাচার্য হিসেবে এমন একজনকে চাই যিনি বহুত্ববাদী চিন্তাধারা, ন্যায়বিচার, এবং সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিশীল। যিনি সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, এবং কর্মচারীর প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবেন। জনগোষ্ঠী বা জাতিসত্তার ভিন্নতা যেন কোনোভাবেই বৈষম্যের কারণ না হয়। স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে সংহতি ও সম্প্রীতির মডেল হিসেবে কাজ করবেন।অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করবেন। শিক্ষার মান উন্নয়নে উচ্চতর গবেষণা, প্রযুক্তি, এবং উদ্ভাবনকে অগ্রাধিকার দেবেন। সবার জন্য সহজলভ্য ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করবেন।”
তিনি আরো বলেন, “আমি একজন ভিসি চাই যিনি শিক্ষার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠীর সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে পারেন এবং তাঁর নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র নয়, বরং সম্প্রীতি ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলবে।”
ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী স্বাধীন ত্রিপুরা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়টি যেহেতু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সে অনুযায়ী উপাচার্য হিসেবে বিজ্ঞানবিষয়ক কোনো যোগ্য শিক্ষাবিদ আমাদের প্রয়োজন। যিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষার মান ও বিভিন্ন গবেষণার কাজে শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা ও সুযোগ প্রদান করবেন। সেই সাথে পার্বত্য অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করবেন।”
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী এম, আকতারুজ্জামান বলেন,গত ৬ জানুয়ারি (সোমবার) উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ভিসি নিয়োগের জন্য সরকারকে আজ বুধবার(৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ভিসি হিসেবে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি একজন যোগ্য ব্যক্তি চাই, যিনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ নিরসনে কাজ করবেন। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে ছাত্র সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সবকিছু সুষ্ঠভাবে করবেন। শিক্ষার্থীরা ভিসি নিয়োগে কোনো নিয়ম বেঁধে না দিলেও আমাদের ভিসি যেন অবশ্যই যোগ্য, শিক্ষার্থীবান্ধব ও অসাম্প্রদায়িক কেউ হন এটাই শিক্ষার্থীদের চাওয়া।