দেশব্যাপী চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটের সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষকদের উপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী লাগাতার আন্দোলন করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলন ভয়াবহরূপ নিয়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেটের সামনে ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আবু সাঈদ নামের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন, এবং পুলিশের ছোড়া টিআরশেল আর রাবার বুলেটে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য এবং প্রক্টর এর উপস্থিতিতে কীভাবে পুলিশ বিশ্বাবিদ্যালয় ক্যম্পাসে প্রবেশ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালিয়ে নির্বিচারে হত্যা করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে উপাচার্য এবং প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করে পোস্ট করছে।
ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মুকুল শিক্ষকদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন শিক্ষক যদি গতকাল থাকতেন তাহলে ঐ ছেলেটা মারা যেতনা, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এখানে প্রক্টরের অনুমতি ছাড়া পুলিশ আসতে পারবে না অথচ পুলিশ আমাদের ক্যম্পাসে ঢুকে আমাদের বাইরে রেখে আমাদের উপর গুলি করেছে।
শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলনে নিয়ে তিনি বলেন, এরা মানুষকে দেখাচ্ছে এগুলো, এদের শিক্ষক হওয়ার কোন যোগ্যতাই নাই, এদের লজ্জা থাকা দরকার।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গতকাল আমাদের প্রক্টর কোথায় ছিল? লাশ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আমারা হাসপাতালে বসে ছিলাম কোন শিক্ষক যায়নি। সন্ধ্যার পর তিন-চারজন লোক দেখানো শিক্ষক গেছেন।
বাংলা বিভাগের শিক্ষক তুহিন ওয়াদুদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ছবি তুলে চলে এসেছে, পাবলিসিটি করে ছবি দিয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ফেসবুক স্টাটাস ঘিরে মন্তব্যের ঘরে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের নিন্দার ঝড় উঠেছে। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ মন্ডলের এক ফেসবুক পোস্টে মিন্নাতুল জান্নাত লিখেছেন, মেরুদণ্ডহীন শিক্ষকদের দেখে আমরা লজ্জিত।
শফিক নামে আরেকজন লিখেছেন, আপনি আমাদের শিক্ষক ছিলেন এটাই সবচেয়ে বড় লজ্জার।
প্রসঙ্গত,শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে কয়েকজন শিক্ষক ফেসবুকে পোস্ট করলেও তাদের কাউকেই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সাথে কিংবা পুলিশকে বাঁধা দিতে দেখা যায়নি।