রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত আবাসন সুবিধায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) তদন্তে উঠে এসেছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বাড়ি ভাড়া কর্তন না করায় প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে।
তদন্তে দেখা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কম হারে বাড়ি ভাড়া কর্তন করা হচ্ছে। যেখানে মূল বেতনের ৪০-৫৫% কর্তন করার নিয়ম, সেখানে মাত্র ২ হাজার থেকে ২২০০ টাকা কর্তন করা হচ্ছে। ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরেও একই অনিয়ম অব্যাহত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি করেছে, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাসা ভাড়া কর্তন করা হচ্ছে। তবে ইউজিসি তা অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এছাড়া, নিয়ম অনুযায়ী জুনিয়র শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও সিনিয়র ও ক্ষমতাসীন দলের শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী আসার পরও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বিধিবহির্ভূতভাবে আবাসন বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষার্থীরা এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, যেখানে তাদের আবাসিক হলে উচ্চহারে ভাড়া দিতে হচ্ছে, সেখানে শিক্ষকদের জন্য ভর্তুকি দেওয়া অনৈতিক।
এ বিষয়ে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম আশিকুর রহমান বলেন, ২০২৪-এর বিপ্লবের পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেক্টরের দুর্নীতি,মঅনিয়মগুলো ঠিক করতে না পারা আমাদের জন্য বড় একটা ব্যর্থতা। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হল ভাড়া নেওয়া হয় ২৫০ টাকা, যা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তুলনা করলে অনেক বেশি। সেখানে, কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তার বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফির চেয়ে কম নেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমরা আহবান জানাই, দ্রুত যেন এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সকল ধরনের অনিয়ম ও বৈষম্য বিলোপ করা হয়।
উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলী জানান, বিষয়টা নিয়ে ইউজিসির সঙ্গে কথা হয়েছে। নতুন নীতিমালা গঠনের জন্য কমিটি করা হয়েছে। তারা ইতিমধ্যে রিপোর্টও করেছে। ডরমিটরিতে শুধু প্রভাষক পর্যায়ের শিক্ষকরা থাকবেন।পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগের উপাচার্যের আমলে যেসব শিক্ষক-কর্মকর্তা উঠেছেন, তারাই বর্তমানে আছেন। তাদের মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ঢুকে অধ্যাপক হয়ে গেছেন এমন অনেকেও আছেন। তাদেরকে আমি নোটিশ পাঠিয়েছি। সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি পরবর্তী ব্যবস্থা নিব।
আরইউএস//বিএন