লাহোরে আজ দুই ‘চোকার্সে’র লড়াইয়ে
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা মানেই ‘চোকার্স’, যদিও তারা এই পরিচয় পছন্দ করে না। তবে একই কথা নিউজিল্যান্ডের ক্ষেত্রেও বলা হলে খুব বেশি ভুল হবে না। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া যেন দুই দলেরই নিয়তি! আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে এই দুই দল, যারা বড় মঞ্চে চাপের মুখে ভেঙে পড়ার জন্য পরিচিত।
এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ রয়েছে। একমাত্র ভারত ছাড়া বাকি সব দলই যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়িয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডও তার ব্যতিক্রম নয়। দুবাই হয়ে পাকিস্তানে এসে তারা আজ সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে। দুই দলের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার ও টেম্বা বাভুমা সংবাদ সম্মেলনে ভ্রমণ ক্লান্তির প্রসঙ্গ তুলেছেন। যদিও এই ধকল উভয় দলের জন্যই সমান হওয়ায় সরাসরি অভিযোগ কেউ করেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার ‘চোকার্স’ তকমার পেছনে বহু ইতিহাস আছে। ১৯৯২ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বৃষ্টি আইনের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে হৃদয়বিদারক বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের। ১৯৯৮ সালে ঢাকায় প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি (তৎকালীন মিনি বিশ্বকাপ) জিতলেও এরপর একের পর এক ব্যর্থতা। ২০১৫ ও ২০২৩ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেও ফাইনাল খেলতে পারেনি দলটি।
অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের গল্প কিছুটা ভিন্ন। তারা ফাইনালে উঠলেও শিরোপা ছুঁতে পেরেছে মাত্র একবার—২০০০ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও ট্রফি হাতছাড়া করেছে কিউইরা। ২০২৩ বিশ্বকাপেও সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিয়েছে।
২০১৫ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেবার কিউইদের জয়ের নায়ক ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত গ্রান্ট এলিয়ট। এবারও টেম্বা বাভুমার ভয় নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ তারকা কেইন উইলিয়ামসনকে নিয়ে।
যদি আজকের সেমিফাইনালে পাকিস্তান থাকত, তাহলে লাহোরে উন্মাদনা থাকত চরমে। কিন্তু দুই নিরপেক্ষ দলের লড়াই হওয়ায় উত্তেজনা কম। পাকিস্তানের কোচ ও নির্বাচক আকিব জাভেদ এবং টি-টোয়েন্টি দলের নতুন অধিনায়ক সালমান আগা মাঠে এলেও তারা এসেছিলেন নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য পাকিস্তান দলের ঘোষণা দিতে।
দক্ষিণ আফ্রিকা কখনো বিশ্বকাপ বা চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল খেলতে পারেনি, নিউজিল্যান্ড ফাইনাল খেললেও ট্রফি জিততে পারেনি (২০০০ সালের ব্যতিক্রম বাদে)। আজকের ম্যাচে এক দল অবশ্যই সেমিফাইনালের দেয়াল ভেঙে এগিয়ে যাবে।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম অপেক্ষায়—দুই ‘চোকার্স’-এর লড়াইয়ে কারা নিজেদের মানসিক বাধা পেরিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটতে পারে!