লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সাবেক বিচারক নাওয়াফ সালামকে নিয়োগ দিয়েছেন। গতকাল, ১৩ জানুয়ারি, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
নাওয়াফ সালামকে প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনীত করার পর ইরান-সমর্থিত শিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটির দাবি, এই নিয়োগ বিরোধীদের দমন করার উদ্দেশ্যে গৃহীত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নাওয়াফ সালামকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের মাধ্যমে লেবাননে রাজনৈতিক ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের ফলে হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে তাদের ওপর আরও চাপ বাড়তে পারে।
লেবাননে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জোসেফ আউনের নির্বাচন এবং নাওয়াফ সালামের প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য ছিল, এবং তত্ত্বাবধায়ক মন্ত্রিপরিষদ দ্বারা দেশ পরিচালিত হচ্ছিল।
নাওয়াফ সালাম সুন্নি মুসলিম এবং সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত। লেবাননের সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য কেবল সুন্নি মুসলিমরাই যোগ্য। এর আগে তিনি দুবার এই পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
সালামের নিয়োগকে হিজবুল্লাহ এবং তাদের মিত্র আমাল শিয়া রাজনৈতিক দলের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। হিজবুল্লাহর সংসদীয় ব্লকের নেতা মোহাম্মদ রাদ এই নিয়োগকে দেশের রাজনৈতিক বিভাজন বাড়ানোর কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, নতুন মন্ত্রিসভা দেশের ক্ষমতা ভাগাভাগির ঐতিহ্য বজায় রাখবে।
বিশ্ব মিডিয়া সালামের নিয়োগকে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন ঢেউ বা “সুনামি” বলে আখ্যা দিয়েছে।
আরইউএস