খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক এবং সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ সাকির ওপর হামলার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (৩ মে) গভীর রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোবারক হোসেন নোমান শুক্রবার সন্ধ্যায় পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের পাশে শারীরিকভাবে আঘাত করেন শিক্ষক হাসান মাহমুদ সাকিকে। ঘটনার রেশ ধরে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে ক্ষোভের আগুন। আহত শিক্ষককে খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে সিটি মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভও। রাত ১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন চারদিক—
“শিক্ষকের নিরাপত্তা চাই”,
“যে শিক্ষক আমাদের নিরাপত্তা দেবেন, তারাই নিরাপদ নয়”,
“সন্ত্রাসীদের বিচার চাই”।
ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মুন্না হোসাইন বলেন, “আমাদের শিক্ষকরা যদি নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত থাকেন, তাহলে আমরা শিক্ষার্থীরা কিভাবে নিরাপদ বোধ করব?”
চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেন বলেন, “আমাদের দাবি, নোমানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে হবে। তার এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট নেওয়ার কোনো অধিকার নেই।” ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা নিকৃষ্ট এবং গর্হিত কাজ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ বছরের ইতিহাসে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনার বিচার নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষক লাঞ্ছনার মানে পুরো শিক্ষক সমাজকেই অপমান করা।”
রাত ২টা পর্যন্ত চলা বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হলে রবিবার থেকে ক্লাস বর্জনসহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা।