দীর্ঘদিন ধরেই নিত্যপণ্য, কাঁচাবাজার, মাছ-মাংস, এমনকি মসলাজাত পণ্যের দামে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। বাজারে বেড়েই চলছে অস্থিরতা। সরবারহে খুব একটা কোনো ঘাটতি না থাকলেও বেশিরভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সপ্তাহের ব্যবধানেই দাম বেড়ে গেছে বিভিন্ন সবজির। ১০০ টাকার নিচে তেমন কোনো সবজি মিলছে না।
শুধু তাই নয়, কাঁচামরিচের দাম ৪০০ টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করছে, পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে। মুরগি আর মাছের দাম তো আগে থেকেই বাড়তি। বাজারে গিয়ে কোনটা কিনবেন আর কোনটা কিনবেন না, ভেবে হতাশ সাধারণ ক্রেতারা। সরকারের পট পরিবর্তনের ডামাডোলে বাজারদর নিয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত নিম্ন-মধ্যবিত্তদের।
বিক্রেতারা বলেন, শুধু রাজধানী ঢাকায় নয়, উৎপাদন এলাকায়ও সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। শীতের আগাম সবজি উঠতে শুরু করেছে তবুও, মোকাম গুলোতে সরবরাহ কম আসতেছে। তারা আরও বলেন, বন্যার হওয়ার কারণে ও সবজির জোগান কমেছে।

শুক্রবার রাজধানীর বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দাম বাড়লেও গত সপ্তাহের চেয়ে ডিম, পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিম্নমুখী। তবে বেশিরভাগ সবজির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১৪০ টাকা দরে। এরমধ্যে আছে গোলবেগুন,করলা, চিচিঙা, বরবটি, ঝিঙা, ধুন্দলের মতো সবজি। এই সবজিগুলোর দাম ১০০ টাকার নিচে নামছেই না।
সবজির খুচরা বিক্রেতারা বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে এসব সবজির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা করে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে কাঁচামরিচের দাম নিয়ে বেড়েছে ক্রেতাদের অস্বস্তি। আজ শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ২৮০ থেকে ৩৪০ টাকা দরে। কখনো কখনো ৪০০ টাকা ছাড়িয়েও যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পাইকারি কাঁচামাল আড়তদারদের মতে দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি অস্বাভাবিক। উত্তরাঞ্চলেরও বেশ কিছু এলাকায় বন্যা হচ্ছে। ফলে ক্ষেতে সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকার মোকামগুলোতেও সরবরাহ কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। সেজন্য উৎপাদন এলাকায় কৃষকরাও এখন তুলনামূলক দাম বেশি নিচ্ছেন।
এদিকে, আমদানির উদ্যোগ ও শুল্ক কমানোর খবরে পর গত তিন দিনে ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি ডজন ডিম শুক্রবারে ১৬০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে, যা সপ্তাহের শুরুর দিকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
তবে এ সময় ব্রয়লার মুরগির দর কমেনি। এখনো ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা দরে। সোনালি জাতের মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়।
ভারত রপ্তানির শর্ত শিথিল করায় দেশের বন্দরগুলো দিয়ে পেঁয়াজ আসা শুরু হয়েছে। তারপরও কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা দরে।
তবে খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা সিন্ডিকেটের শিকার। পাইকারী কিনতেই তাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ফলে চলতি মূল্যের চেয়ে কমদামে সবজি বিক্রয় সম্ভব না।