পৃথিবী আজ উষ্ণ। তাই ক্ষনে ক্ষনে প্রকৃতি বদলাচ্ছে তাঁর আপন চিত্র। কখন তিব্র খরায় ঝলসে দিচ্ছি, ক্ষণেক পরেই বন্যার পানিতে ভাসিয়ে নিচ্ছে শেষ সম্বল। মানুষ অসহায় প্রকৃতির এই কষাঘাতে।
ভূগোলবিদের মতে প্রকৃতির এই পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ বৃক্ষ নিধন। এবং অঞ্চল হিসেবে আমাদের এই দেশ বৃক্ষ নিধনে সর্বউচ্চ। এমনই পরিস্থিতিতে নিজ শিক্ষার্থীদের বৃক্ষ নিধনের কুফল ও বৃক্ষ প্রেমী হিসেবে গড়ে তুলতে গতানুগতিক ধারার এসাইনমেন্ট না করিয়ে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক নাসির মিয়া।
বিভাগটির শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের শ্রেণীর মোট শিক্ষার্থীদের বারোটি দলে ভাগ করা হয়। এবং প্রত্যেক দল দুইটির অধিক ঔষধি চারা রোপন করে। এসব চারা অধিকাংশ ব্যবসায় অনুষদের চারপাশে লাগানো হয়। সবশেষে চারাগুলো কে তদারকির জন্য প্রত্যেক দল অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।
বিভাগটির শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন শুভ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের পড়াশোনা মূলত খাতা-কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু স্যার আমাদের এসাইনমেন্টের আদলে যে কাজ দিয়েছেন তা একটা চমৎকার উদ্যোগ। এবং এই সুন্দর কাজে অংশ নিতে পেরে আমার খুবেই ভালোলাগাছে।
প্রভাষক নাসির মিয়া বলেন, বইয়ের শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা নয়। শিক্ষার্থীদের এই সমাজের প্রতি কিছু দায়বদ্ধতা আছে। তাদের ভিতর সেই উপলব্ধি আনতেই আমার এই বৃক্ষরোপণ এসাইনমেন্ট হাতে নেওয়া। আমরা সকলেই জানি পৃথিবী জুড়ে বর্তমানে বৈশ্বিক উষ্ণতা বিরাজ করছে। এখানেই শেষ নয় প্রতিনিয়ত যা বেড়েই চলছে। ফলস্বরূপ প্রাকৃতিতে বিপর্যয় নেমে আসছে।
তিনি আরো বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে এই বিপর্যয়ের বেশি প্রভাব পড়ছে পর্যটন খাতে। আমি একজন পর্যটন বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্র হিসেবে, খাতটির এই বিপর্যয় রুখতে দায়বদ্ধ। আজকে উষ্ণতার ফলে সমুদ্রের বরফ গলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি করছে এবং সমুদ্রের সৈকত গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও অতিরিক্ত গরম বেড়ে যাওয়া ফলে ভ্রমণ পিপাসুরা ভ্রমণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী সবুজয়নের একটি বিপ্লব হচ্ছে। এই বিপ্লব পর্যটন নীতির একটি অংশ। তারই অংশ এই এসাইনমেন্ট। যার মূল উদ্দেশ্য সবুজ ক্যাম্পাস বিনির্মাণ।