দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী রবিবার (২৫ মে) বিকেল ৫টায় তার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’য় এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জুলাই মাসের গণ-আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া সকল রাজনৈতিক দল থেকে একজন করে প্রতিনিধি এই বৈঠকে আমন্ত্রিত হয়েছেন।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় যমুনায় পৃথকভাবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠক শেষে প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, “প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমার বাইরে তা যাবে না। জামায়াত ও এনসিপি এই সময়সূচিকে সমর্থন দিয়েছে এবং তিনটি দলই চায় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বেই নির্বাচন হোক।”
তিনি আরও জানান, “স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে এনসিপি জোর দিয়েছে এবং তারা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনুষ্ঠিত সব নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে তারা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করেছে।”
বিএনপি পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়, তারা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চায় না। তবে নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও দুই ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টাকে বাদ দেওয়ার জন্য লিখিত সুপারিশ দিয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বৈঠক শেষে বলেন, “নির্বাচন এমন সময় হওয়া উচিত যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ না হয়। নির্বাচন আয়োজনের আগে বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কারের কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ জনগণের সামনে আনা জরুরি।”
এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা শেখ হাসিনার শাসনামলে অনুষ্ঠিত সকল জাতীয় নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থাও প্রকাশ করেছেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
এদিকে, বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হয়। প্রেস সচিব জানান, “প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন যে, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার চলতি মাসের মধ্যেই শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোও দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরুর জন্য আহ্বান জানিয়েছে।”
এর আগেও গতকাল শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ইউনূস। বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, “যদি পরাজিত পক্ষের উসকানি বা বিদেশি চক্রান্তের কারণে সরকারের দায়িত্ব পালনে অসুবিধা সৃষ্টি হয়, তবে তা জনসমক্ষে তুলে ধরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এ বিষয়ে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা পরিষদকে আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি এখনও আমাদের সঙ্গে আছেন এবং দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”