ফ্রিল্যান্সিং হলো স্বাধীনভাবে কাজ করার একটি পদ্ধতি, যেখানে একজন ব্যক্তি (ফ্রিল্যান্সার) কোনো নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্থায়ীভাবে যুক্ত না থেকে প্রজেক্ট বা চুক্তিভিত্তিক কাজ করে আয়ের সুযোগ পান।
সাধারণত গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত অনলাইন মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট খুঁজে নেয় এবং কাজের বিনিময়ে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক গ্রহণ করে।
সহজে ফ্রিল্যান্সিং শুরুর কিছু টোটকা নিয়ে আলোচনা করা হলো এই প্রতিবেদনে বিস্তারিত
১. শিক্ষার্থী হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন যেভাবে
শিক্ষার্থী হিসেবে পড়ালেখার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট হার্ড স্কিল শেখার দিকে মনোযোগ দিতে পারেন যে কেউ। পাশাপাশি যোগাযোগের নানা ক্ষেত্রসহ অন্যান্য সফট স্কিলও রপ্ত করা যেতে পারে।
ইতিবাচক ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে সংযোগ রাখার মাধ্যমে নিয়মিত শেখার অনুপ্রেরণার সঞ্চারও হয়। দক্ষতা অর্জনের পর কাজ শুরু করুন।
২. নতুনদের জন্য পরামর্শ
ফ্রিল্যান্সিংয়ে একদম নতুনদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো—
-
সবসময় নিজের স্কিল আপডেট করুন ও নতুন বিষয় শিখুন।
-
ডলার কামানোর চেয়ে ক্লায়েন্টের কাজের মান উন্নত করার দিকে ফোকাস করুন।
-
সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আনুন।
-
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য পরিকল্পিতভাবে আয়-ব্যয় করুন।
-
প্রতিমাসের আয়ের কিছু অংশ নিজের দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগ করুন।
৩. ভবিষ্যতে চাহিদাসম্পন্ন কাজ
ফ্রিল্যান্সিংয়ে টিকে থাকতে হলে এমন স্কিল বেছে নিতে হবে, যার চাহিদা দীর্ঘমেয়াদে থাকবে। কয়েকটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হলো—
-
সাইবার সিকিউরিটি
-
এআই ও মেশিন লার্নিং
-
ডাটা অ্যানালিটিক্স
-
ব্লকচেইন টেকনোলজি
-
সফটওয়্যার ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
-
ভিডিও এডিটিং ও মোশন গ্রাফিক্স
-
ডিজিটাল মার্কেটিং ও এসইও
৪. ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা
অনেকেই মনে করেন, ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়। আসলে বিষয়টি ভুল। মূলত একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করাই আসল বিষয়। আপনার কর্মদক্ষতা ও যোগাযোগের ক্ষমতা থাকলেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করা সম্ভব।
৫. প্রতারকদের থেকে সাবধান!
ফ্রিল্যান্সিং শেখানোর নাম করে বিশ্বজুড়েই প্রতারণা করার নানা ঘটনা অনেক ঘটে থাকে। তাই প্রতারকদের চেনার কিছু উপায়ও জেনে রাখা দরকার। তার মধ্যে কিছু পন্থা হলো—
-
প্রতারকদের কোনো প্রোফেশনাল মার্কেটপ্লেস প্রোফাইল থাকে না।
-
বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়াই প্রতারকেরা কোর্স বিক্রি করে থাকেন।
-
বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে কোর্স অফারও করে থাকতে পারেন তারা।
-
লেকচারে শুধু মুখরোচক কথা বললেও, কাজে দক্ষতা শেখানোর ব্যাপারে প্রতারকেরা অনেক পিছিয়ে।
-
সাধারণত প্রতারকদের কোনো অফিস বা নির্ভরযোগ্য ঠিকানা থাকে না।
৬. কভার লেটার লেখার প্রতি বিশেষ নজর
ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ পাওয়ার জন্য কভার লেটার লেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি এমনভাবে লিখতে হবে যেন ক্লায়েন্ট বিশ্বাস করে যে আপনি কাজটি দক্ষতার সঙ্গে করতে পারবেন। কভার লেটারে—
-
কাজের প্রাসঙ্গিক নমুনা সংযুক্ত করুন।
-
পুরো কাজটি কীভাবে করবেন, তা ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করুন।
-
সংক্ষিপ্ত, স্পষ্ট ও আত্মবিশ্বাসী ভাষায় লিখুন।
-
সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার সফলভাবে গড়ে তোলা সম্ভব।
বর্তমান আধুনিক বিশ্বে উত্তরোত্তর ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হচ্ছে। ফলে দেশের যুবসমাজ সহজেই ফ্রিল্যান্সি করে আর্থসামাজিক খাতে রাখতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।