আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে একজন মা হিসেবে যুক্ত হয়েছি। যখন আমাদের সন্তানদের রক্ত রাজপথে ঝরতে শুরু করলো তখন আসলে চুপ করে বসে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ মিনার মুক্তমঞ্চে আয়োজিত ‘আগামীর বাংলাদেশ: তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সদস্য সারা আহমেদ সাবন্তী।
তিনি বলেন-আমি এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছি একজন মা হিসেবে তার আগে একটা জিনিস আমার মনে হয়েছিলো যেদিন ঢাকা মেডিকেলের ইমারজেন্সিতে ঢুকে আহতদের আবার পিটানো হলো সেদিন চিকিৎসক হিসেবে আমি খুব বিপন্নবোধ করেছি।তো এই সমস্ত মিলিয়ে (আন্দোলনে) আসা।
আমরা রাজনৈতিক পরিচয়হীন ডাক্তাররা মিলে একটা সংগঠন করেছি।আমরা আমাদের স্বাস্থ্য ব্যাবস্থাকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করতেছি।
পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন,যারা দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন, কোন অঙ্গহানি হয়েছে তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টা আমরা খুব গুরুত্বের সাথে নিতে চাচ্ছি।সেজন্য তহবিল সংগ্রহ থেকে তাদের পুনর্বাসনের জন্য দীর্ঘমেয়াদে যা লাগে আমরা করবো।
সেমিনারে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাঞ্জুর আল মতীন বলেছেন, এই লড়াই যেমন ঢাকার, তেমনি এটা গোটা বাংলাদেশেরও। শুধু ঢাকা নিয়ে থাকলে এই বিপ্লব সম্ভব হতো না।
আমরা দেখেছি, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে মাদ্রাসা, ইংরেজি মাধ্যম ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রুখে দাঁড়িয়েছে। এই লড়াই যেমন ঢাকার, তেমনি এটা গোটা বাংলাদেশেরও। এটা ভুলে গেলে চলবে না। রাজশাহীতে মানুষ জীবন দিয়েছে, রংপুরে আবু সাঈদ জীবন দিয়েছে। ঢাকায় আমার ছোটো ভাই ফারহানসহ অনেকে জীবন দিয়েছে। শুধু ঢাকা নিয়ে থাকলে এই বিপ্লব সম্ভব হতো না।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “আমার কাছে এ সময়টা অসম্ভব আনন্দ, বেদনা, আশংকা এবং আশার সময়। এসব কিছু নিয়েই আমি বেঁচে আছি। আজকের এ সমাবেশটা হলো আনন্দ। আর বেদনার হলো সম্ভবত আজকেও আমরা একজন তরুণকে হারিয়েছি এবং শত শত সন্তান তারা তাদের চোখ হারিয়েছে। জানি না তারা কখনো পৃথিবীর আলো দেখতে পারবে কিনা। আশঙ্কা হলো গত ১৫ গত বছরে যেই অশুভ শক্তি ও স্বৈরাশাসক জন্ম হয়েছে এবং তাদেরকে মদদ দিয়ে যারা মাথায় তুলে রেখেছে তাদের জন্য।”
সেমিনারে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম সালমান সাব্বিরের সঞ্চালনায় সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইন বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদুল ইসলামসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় রাবিসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
দীন/এমএ//