রুশাইদ আহমেদ: ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী জানিয়েছেন, দক্ষিণ এশিয়ার জন্য সার্ক একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্থা এবং এটিকে পুনর্গঠনে অভিন্ন অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ও নেপাল। সার্ককে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উভয় দেশের দৃষ্টিভঙ্গি অভিন্ন হওয়ায় বাংলাদেশ ও নেপাল একসঙ্গে কাজ করবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-নেপাল বন্ধন: নতুন উচ্চতার দিকে’ শীর্ষক সেমিনারে এ সব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত স্মরণ করিয়ে দেন, সর্বশেষ সার্ক সম্মেলন ২০১৪ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর আর কোনো শীর্ষ বৈঠক হয়নি। যদিও কারিগরি কমিটি ও ওয়ার্কিং গ্রুপগুলোর কার্যক্রম চলমান, রাজনৈতিক পর্যায়ে তেমন অগ্রগতি নেই। তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সার্ককে সামনে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে পরস্পরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্য, জ্বালানি সহযোগিতা, পরিবহন এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ-নেপাল অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।
ঘনশ্যাম ভান্ডারী আরও উল্লেখ করেন, সমুদ্রবিহীন নেপাল বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে উপকৃত হতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ তার বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে নেপালের জলবিদ্যুৎ আমদানির মাধ্যমে লাভবান হতে পারে। উভয় দেশের মধ্যে সড়ক, রেল এবং বিমান যোগাযোগ সম্প্রসারণ এই অংশীদারিত্বে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। যা দুদেশের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করবে ইতিবাচকভাবে।
এর পাশাপাশি, ওই সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস, বিস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গাউসুল আজম সরকার ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিসসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বাংলাদেশ-নেপাল কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-নেপাল অংশীদারিত্ব আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এই সহযোগিতা বাস্তবসম্মত কূটনীতির একটি কার্যকর মডেল হয়ে উঠতে পারে।
নিজেদের অর্থনীতি এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডসমূহকে অব্যাহত রাখতে তাই দুদেশের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সহযোগিতা কার্যক্রম টিকিয়ে রাখার কোনো বিকল্প নেই বলেও সেমিনারে মন্তব্য করেন বক্তারা।