মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন প্রয়োগের কারণে দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা ঘটেছে সিঙ্গাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত ‘সিঙ্গাইর ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’-এ। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মৃত নবজাতকদের পরিবারকে আলোচনার মাধ্যমে আপস মীমাংসায় রাজি করিয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার প্রসব বেদনায় মাজেদুল ইসলামের স্ত্রী ও মো. ফিরোজ আলমের স্ত্রী ওই ক্লিনিকে ভর্তি হন। ওইদিন বিকেলে মানিকগঞ্জ সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. শামিমা রহমান চারটি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করেন। এতে মাজেদুল ও ফিরোজের স্ত্রী পুত্র সন্তান প্রসব করেন।
অভিযোগে বলা হয়, সিজারের পর মাজেদুলের ছেলেকে একটি মেয়াদোত্তীর্ণ টেজিড (২৫০ মি.লি.) ইনজেকশন পুশ করা হলে শিশুটির হার্টরেট কমে যায়। পরে তাকে ঢাকার শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। পরদিন ফিরোজ আলমের সন্তানকেও একই মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন দেওয়া হলে সে-ও মৃত্যুবরণ করে।
ফিরোজ আলম বলেন, ‘শিশুটির জন্মের পর কোনো জটিলতা ছিল না। কিন্তু ইনজেকশন দেওয়ার পরপরই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এবং এক ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যু হয়।’ অপরদিকে, মাজেদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘আমার সন্তান সুস্থ ছিল। আমাদের সামনেই নার্সরা মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন দেয়। এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, এটি হত্যাকাণ্ড।’
তবে ক্লিনিকটির মালিক মোস্তাক আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কোনো মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়নি। নবজাতকদের মধ্যে একজনের জন্মের সময় জটিলতা ছিল এবং অন্যজন শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাফছান রেজা জানান, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছি, তবে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’
সিঙ্গাইর থানার ওসি জে.ও.এম. তৌফিক আজম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ক্লিনিকে পুলিশ পাঠানো হয় এবং মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তবে পরিবারের আপত্তির কারণে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।