অ্যালামনাই এসোসিয়েশন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণার অভাব ও স্বার্থপর মানসিকতার কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন (রুয়া) আজও কার্যকরভাবে গড়ে ওঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। শনিবার (৩ মে) সকালে রুয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য এসময় বলেন, আমাদের দেশে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের গুরুত্ব বা ভূমিকা নিয়ে এখনো স্পষ্ট কোনো ধারণা বা চর্চা গড়ে ওঠেনি। আজকের আধুনিক বিশ্বে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শুধু সরকারি অর্থ, দান বা অনুদানের ওপর নির্ভর করে টিকে থাকতে পারে না। মাঝে মাঝে উদ্যোগ নেওয়া হলেও নানা কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ ৭২ বছরেও একটি কার্যকর অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গড়ে ওঠেনি।
তিনি আরও বলেন, অনেকে মনে করেন অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের মাধ্যমে ক্ষমতার চর্চা বা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পাওয়া যাবে। এমনকি এখানে নগ্ন রাজনীতিও চলে এসেছে। রুয়া গড়ে না ওঠার পেছনে মূলত অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের উদ্দেশ্য বোঝার ঘাটতি এবং স্বার্থান্বেষী মনোভাব দায়ী। কোনো গোষ্ঠী বা মতবাদের প্রতি অন্ধ আনুগত্য ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রবণতাই এর প্রধান কারণ।
উপাচার্য জানান, আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছিলাম রুয়াকে কার্যকরভাবে গড়ে তোলার। এজিইউএম থেকে সিদ্ধান্ত হয় একটি অ্যাডহক কমিটি নির্বাচন পরিচালনা করবে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও চলছিল। কিন্তু বিভিন্ন গোষ্ঠী ও দলের স্বার্থ চিন্তা করে এ উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করা হয়। এরপর অ্যাডহক কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা জানান তারা এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন পরিচালনায় অক্ষম। ফলে কমিটি বিলুপ্ত হয়।
বর্তমানে রুয়ার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে উপাচার্য বলেন, রুয়ার সংবিধানের ৩২ এর ‘ঙ’ ধারায় বলা আছে—রুয়ার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও তিনজন অন্যান্য পৃষ্ঠপোষক মিলে নতুন একটি অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। তাদের একমাত্র দায়িত্ব হবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে রুয়ার দায়িত্ব হস্তান্তর করা। সে অনুযায়ী আমরা ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ও অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছি এবং তাদের দায়িত্ব হলো নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা।
উল্লেখ্য, আগামী ১০ মে রুয়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেন। এর পর গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এই প্রেক্ষাপটে রুয়ার অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে একটি নোটিশ জারি করেন।