অনেকেই হঠাৎ হঠাৎ পা অবশ হয়ে যাওয়াকে সাধারণ সমস্যা মনে করেন। তবে এটি অবহেলা করা ঠিক নয়, কারণ এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, রক্ত সঞ্চালনে বাধা বা স্নায়ুর জটিলতার কারণে পা অবশ হতে পারে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে এমন পাঁচটি স্বাস্থ্য সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা পা অবশ হওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে।
১. ডায়াবেটিস ও পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি
ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি একটি সাধারণ সমস্যা। উচ্চ রক্তশর্করা ধীরে ধীরে স্নায়ু নষ্ট করে দেয়, যার ফলে পা অবশ হয়ে যেতে পারে। দীর্ঘ সময় নিয়ন্ত্রণে না রাখলে এটি ব্যথার কারণও হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
২. ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি
ভিটামিন বি১২ স্নায়ুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাব হলে পা অবশ হয়ে যাওয়া, পেশি দুর্বলতা ও মাথা ঘোরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২ নিশ্চিত করা দরকার।
৩. মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (এমএস)
এই অটোইমিউন রোগ স্নায়ুতন্ত্রের প্রতিরক্ষামূলক আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত করে, ফলে স্নায়ু বার্তা সঠিকভাবে আদান-প্রদান করতে পারে না। এর ফলে রোগীরা দুর্বলতা বা অবশ অনুভব করেন এবং পা নড়াচড়া করতেও সমস্যা হতে পারে।
৪. সায়াটিকা ও হার্নিয়েটেড ডিস্ক
সায়াটিকা তখনই হয় যখন সায়াটিক স্নায়ু সংকুচিত হয়, যা পিঠের নিচের অংশ থেকে পা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। এর অন্যতম কারণ হলো মেরুদণ্ডে হার্নিয়েটেড ডিস্ক। এটি এক বা দুই পা অবশ করার পাশাপাশি ব্যথার কারণও হতে পারে। ওষুধ, থেরাপি বা গুরুতর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে।
৫. স্ট্রোক ও ক্ষণস্থায়ী ইস্কেমিক আক্রমণ (TIA)
স্ট্রোক হলে মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত রক্ত পায় না, যার ফলে পা অবশ হয়ে যেতে পারে। যদি কারও পা অবশ, কথা বলতে সমস্যা, মাথা ঘোরা বা মুখ ঝুলে পড়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়, তবে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া উচিত।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
- পা অবশ হওয়া বারবার হলে
- ব্যথার সঙ্গে অবশ লাগলে
- হাঁটতে বা ভারসাম্য বজায় রাখতে সমস্যা হলে
- শরীরের অন্য অংশেও অবশ ভাব দেখা দিলে
এই লক্ষণগুলোর উপস্থিতি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। তাই এ ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।