বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর দায়িত্ব ছিল সুধা সদনে খাবারের পানি সরবরাহ করা, যার ফলে তিনি ‘পানি জাহাঙ্গীর’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন। পরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। এই পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, বিভিন্ন চাকরিতে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর। প্রভাব খাটিয়ে তদবির বাণিজ্যের মাধ্যমে গড়েছেন কোটি টকার সম্পদ। পেয়েছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতির পদ। প্রতারণার মাধ্যমে তিনি যায় দেশে ও বিদেশে ৪০০ কোটি টাকার সম্পদসহ গাড়ি–বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে জানা যায়।
গত ১৪ জুলাই গণভবনে চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, “আমার বাসার জন্য কাজ করা পিয়ন এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া তার চলাচল হয় না। এটা বাস্তব ঘটনা। কীভাবে এই টাকা বানাল? যখন আমি জেনেছি, তাকে বাদ দিয়ে কার্ড সিজ করে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি।’ তখনই জাহাঙ্গীর দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যায় বলে খবর পাওয়া গেছে।
এবারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিয়ন) ৪০০ কোটি টাকার মালিক জাহাঙ্গীর আলমকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে তাকে আগামী ২৪ অক্টোবর হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
দুদক উপপরিচালক রাশেদুল ইসলাম সই করা নোটিশ তার নিজ বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিলে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও আলোচিত ওই পিয়ন জাহাঙ্গীর বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেছেন।
দুদক সূত্র জানায়, আলোচিত পিয়ন জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ২০ আগস্ট অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। এরপর অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি এরই মধ্যে তার সম্পদ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহে সরকারি-বেসরকারি ১০০-এর বেশি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছেন।