বিশেষ প্রতিনিধি: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি মিলিয়ে টানা ১০ দিনের ছুটিতে পর্যটকদের এক আনন্দঘন উৎসবের মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত।
ঈদের দিন শনিবার সকাল থেকেই সৈকতের পরিবেশ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে হাজারো পর্যটকের আগমনে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোড়ানো স্নিগ্ধ ঢেউ আর নীল জলরাশির টানে মানুষ ছুটে আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
ঈদের নামাজের পরপরই কুয়াকাটার বিশাল উপকূলে পর্যটকদের ভিড় বাড়তে থাকে। কেউ পরিবারের সঙ্গে, কেউ বন্ধুদের সঙ্গে ছুটে আসেন একটুখানি প্রশান্তি খুঁজতে। সৈকতের উন্মুক্ত পরিবেশ, ঢেউয়ের মনোহরণ শব্দ এবং সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের অপার্থিব দৃশ্য যেন আরও বাড়িয়ে দেয় ঈদের আনন্দ।
সৈকতের পাশাপাশি আশপাশের বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থানেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। লেম্বুর বন, শুঁটকি পল্লি, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি ও কুয়াকাটা বৌদ্ধবিহারে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর ছিল পুরো এলাকা। কেউ সাঁতার কাটছেন, কেউ দলবেঁধে ছবি তুলছেন, কেউ আবার সৈকতের ছাতাবেঞ্চে বসে ঢেউয়ের গর্জনে হারিয়ে যাচ্ছেন আপন মনে। অনেকেই ঘোড়ার গাড়ি, মোটরসাইকেল বা ইজিবাইকে চড়ে সৈকতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
ঝালকাঠি থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক রাকিব রায়হান জানান, ‘বন্ধুদের সঙ্গে সমুদ্রস্নান করে দারুণ সময় কাটছে। এমন পরিবেশে ঈদ উদযাপন এক কথায় অনন্য।’ বরিশাল থেকে আসা রিফাত-রিংকি দম্পতির অভিমত, ‘সমুদ্রের ঢেউ, সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত— সবকিছুই বারবার মন ছুঁয়ে যায়। তাই সুযোগ পেলেই কুয়াকাটায় চলে আসি।’
কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, ঈদের ছুটির কারণে প্রতিদিন পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। আজ কুরবানির কারণে অনেকেই আসেননি। আগামীকাল থেকে আরো বেশি ভিড় আশা করছি। এতে ব্যবসাও ভালো হবে বলে প্রত্যাশা করোন তিনি।
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। এ বিষয়ে কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, ‘সব গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পটে পুলিশের মোতায়েন রয়েছে। থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকরা যেন নিশ্চিন্তে সময় কাটাতে পারেন, সে ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি।’