ববি প্রতিনিধি
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উচ্চশিক্ষার আশার আলো হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল ২০১১ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু দীর্ঘ ১৪ বছর চলে গেলেও আজ নানা অব্যবস্থাপনা, শিক্ষকদের সংকট এবং প্রশাসনিক জটিলতায় পড়েছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে একাধিক বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। ক্লাস ও পরীক্ষার সময়সূচি বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়াও, আবাসন সংকট, নিন্মমানের ক্যান্টিন সুবিধা এবং ইন্টারনেট সমস্যাও শিক্ষার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।লাইব্রেরিতে বইয়ের সল্পতা ও রিডিং রুমে সিটের সংকট।
বিভিন্ন বিভাগে প্রভাষক ও অধ্যাপকের স্বল্পতা।নিয়মিত ক্লাস না হওয়া।গবেষণার সুযোগ ও গাইডলাইন না থাকা পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ, ল্যাব ও পাঠাগার সংকট, পরিবহন সংকট । নানা ধরনের সংকট গেলেই আছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ৪টি হল, যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা বঞ্চিত। ২৫টি বিভাগের জন্য রয়েছে মাত্র ৩৬টি শ্রেণিকক্ষ। বর্তমানে ১৬৭ জন শিক্ষক দিয়ে প্রায় ১৫০টি ব্যাচে পাঠদান পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকে আবার শিক্ষা ছুটিতে থাকায় শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে।
ভূতত্ত ও খণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সুরমিনা বলেন ,মাসের পর মাস বসে আছি—স্যাররা এতগুলো ব্যাচের একসাথে ক্লাস মেইনটেইন করতে পারছেন না। ফলে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ক্লাস না করেই সময় পার করছে।এসব সংকট দুর হলে আমাদের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আর্শীবাদ হয়ে উঠবে।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ জায়গা দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে আছে। রয়েছে ক্লাসরুম ও আবাসন সংকট। মাননীয় ভিসি স্যার যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে উদ্যোগ নিতেন, তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হতো। নতুন করে কিছু একাডেমিক ভবন ও হল নির্মাণ করা হলে সমস্যাগুলো অনেকটাই লাঘব হতো।
সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসানুর রহমান হাসান বলেন , বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মাত্র ২ টা একাডেমিক ভবন রয়েছে যা পর্যাপ্ত নয় , এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধনে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আশা করি মাননীয় ভিসি স্যার এসকল বিষয়ে মনোযোগ দিবেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া পারভিন বলেন, মাননীয় ভিসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার দিকে নজর দেন, তাহলে এখনকার সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।আমরা চাই,এটি হোক দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষার আলো।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত (অন্তর্বর্তীকালীন) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, “শিক্ষার্থীরাই আমাদের মূল শক্তি। আমি সবসময় শিক্ষার্থীবান্ধব মনোভাব নিয়ে কাজ করি এবং আগামীতেও সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যেতে চাই। আমার বিশ্বাস, আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে কোনো সমস্যাই সমস্যা থাকে না। একটু বুদ্ধি ও সদিচ্ছা থাকলেই সমাধান বেরিয়ে আসে।”