২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের হার আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত বছর বিশ্বজুড়ে অন্তত ১,৫১৮টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে—যা ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি। খবর এএফপির।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) প্রকাশিত অ্যামনেস্টির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরান, সৌদি আরব এবং ইরাক এই মৃত্যুদণ্ডগুলোর অধিকাংশ কার্যকর করেছে। শুধু ইরানেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা ছিল অন্তত ৯৭২—যা ওই বছরের মোট মৃত্যুদণ্ডের প্রায় ৬৪ শতাংশ।
অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, “মৃত্যুদণ্ড একটি নিষ্ঠুর ও অমানবিক শাস্তি, যার আধুনিক সমাজে কোনো বৈধতা নেই।” তিনি আরও জানান, রাজনৈতিক মতপ্রকাশ ও সংখ্যালঘুদের দমন করতে বিশেষভাবে সৌদি আরব এই শাস্তি ব্যবহার করছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চীন, উত্তর কোরিয়া ও ভিয়েতনামের মৃত্যুদণ্ডের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব না হওয়ায় সেগুলো হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে। যদিও অনুমান করা হয়, এসব দেশে হাজার হাজার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়ে থাকে।
সৌদি আরবে ২০২৩ সালে ১৭২ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলেও ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৩৪৫ জনে। অন্যদিকে, ইরাকেও প্রায় চারগুণ বেড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে ১৬ থেকে বেড়ে ৬৩-তে।
অ্যামনেস্টি আরও জানিয়েছে, বিশ্বের মোট মৃত্যুদণ্ডের ৪০ শতাংশের বেশি ছিল মাদক-সম্পর্কিত অপরাধের কারণে, যা মানবাধিকার সংস্থাটির মতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী অগ্রহণযোগ্য। তাদের মতে, মাদক অপরাধকে ‘সবচেয়ে গুরুতর অপরাধ’ হিসেবে দেখা উচিত নয়।
মালদ্বীপ, নাইজেরিয়া ও টোঙ্গা নতুন করে মাদক-সম্পর্কিত অপরাধে মৃত্যুদণ্ড চালুর পরিকল্পনা করছে বলে প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও বুরকিনা ফাসো সাধারণ অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে।