রুশাইদ আহমেদ: ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্য পূরণে সম্ভাব্য সব চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় রেখে এখন থেকেই পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। বৈঠকে বাণিজ্য সংক্রান্ত একটি নির্দিষ্ট সেল গঠনের কথা জানানো হয়, যা শুধু বাণিজ্য সংক্রান্ত কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকবে এবং এটি বদলির আওতায় থাকবে না। এ ছাড়া একটি উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং কমিটি গঠন করা হচ্ছে, যারা সার্বক্ষণিকভাবে এলডিসি উত্তরণ প্রক্রিয়া তদারকি করবে।
এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
প্রধান উপদেষ্টার অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী জানান, বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে এবং এই প্রক্রিয়ায় পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, “আমাদের প্লেন আকাশে, ইমারজেন্সি ল্যান্ডিংয়ের কোনো সুযোগ নেই।” বিভিন্ন সম্ভাব্য ঝুঁকি চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা দূর করতে বাণিজ্য নিয়ে বিশেষ সেল গঠনের পাশাপাশি শক্তিশালী ট্রেড নেগোশিয়েশন টিম গঠনের পরিকল্পনাও চলছে।
চ্যালেঞ্জ থাকলেও তৈরি পোশাক শিল্পে ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে জানান তিনি। উত্তরণের ফলে নতুন সুযোগ তৈরি হবে, আর এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে দেশের মনোভাব বদলাতে হবে। “সব সময় সুবিধা পাওয়ার কথা ভাবলে হবে না, সুবিধা তৈরি করে নিতে হবে,” বলেন তিনি। এলডিসি উত্তরণ মানসিকভাবে নিজেদের সক্ষম হিসেবে প্রতিষ্ঠার সুযোগ এনে দেবে।
তিনি আরও জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৯ সাল পর্যন্ত ডিউটি ফ্রি এক্সেস অব্যাহত রাখবে, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, চীনও এই সুবিধা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে। সুশাসন বাংলাদেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ, তবে সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।
অবশেষে, কূটনীতির বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘প্রো-বাংলাদেশ’, যেখানে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। পাকিস্তানসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কের উন্নয়ন করা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বার্থে।