রাজন হোসেন তৌফিকুল মৌলভীবাজারঃ
আজ ২০ মে, ঐতিহাসিক চা শ্রমিক বা ‘মুল্লুকে চলো’ দিবস। দিনটিকে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় ঘোষণার
দাবি তুলেছেন চা শ্রমিকরা। দিবসটির ১০৪ তম বার্ষিকী সামনে রেখে এ দাবি তুলেছেন তারা।
মঙ্গলবার (২০ মে) দিনটি পালন উপলক্ষে মৌলভীবাজারের ব্যাপক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে চীন ছাড়া বিশ্বের অন্য কোথাও চায়ের প্রচলন ছিল না। ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালিনীছড়া চা বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সেসময় বৃহত্তর সিলেটে চা বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, উড়িশা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়। ‘গাছ হিলেগা, রুপিয়া মিলেগা’ এমন প্রলোভনে শ্রমিকরা বাংলাদেশে এলেও তাদের ভুল ভাঙতে বেশি সময় লাগেনি। বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর আক্রমনে কতো শ্রমিকের যে মৃত্যু হয়েছে তার হিসেব নেই। এছাড়া ব্রিটিশদের অত্যাচার তো ছিলই।
চা শ্রমিক ঐক্যের নেতারা জানিয়েছেন ‘মুল্লুক চলো’ আন্দোলনের দিনটিকে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান, সবেতন ছুটি ঘোষণা এবং আন্দোলনের ইতিহাসকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি নিয়েই এবার দিবসটি পালিত ।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছি- চা শ্রমিক শহিদদের স্মরণে বিভিন্ন চা বাগানে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে সকাল ৮টায় শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় । মৌলভীবাজার জেলার উপজেলা চা বাগানের শ্রমিকরা শ্রদ্ধার সাথে দিন পালন করেন। তাদের দুঃখের জীবন কাহিনি গুলো তুলে ধরেন। চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর ইতিহাসের ২০ মে রক্তস্নাত বেদনাদায়ক দিনের কথা।
উল্লেখ্য, ১৯২১ সালের এ দিনে ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা-শ্রমিক নিজেদের জন্মস্থানে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় চাঁদপুরের মেঘনাঘাটে গুলি করে চা শ্রমিকদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে এ দিনটিকে চা-শ্রমিকরা ‘চা-শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন।