বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়াধীন বস্ত্র অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ৯ টি সরকারি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বি.এস সি. ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।দেশের বস্ত্র শিল্পের চাহিদা বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার ১১ টি টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু নানাবিধ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংকটে এ শিক্ষার প্রতি ছাত্র ছাত্রী দের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। গত ১১ মে (শনিবার) বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ৯ টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষায় কলেজগুলোয় সর্বমোট আসন সংখ্যা ১০৮০ টি। এর বিপরীতে ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম বিক্রি হয়েছে ৪৬৬৬ টি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৭০ ভাগ। পক্ষান্তরে গত বছর ভর্তি ফরম বিক্রি হয়েছিল ৯০০২ টি।
কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকট চরম পর্যায়ে এবং উপযুক্ত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জামালপুর চলছে মাত্র একজন অধ্যক্ষ,একজন ফ্যাশন ডিজাইন এর সহকারী অধ্যাপক যেটার কোন ডিপার্টমেন্ট ই নেই এবং একজন ফোরম্যান এর মাধ্যমে। অন্যান্য কলেজ গুলোতেও রয়েছে প্রয়োজনীয় জনবলের ছয়ভাগের একভাগ শিক্ষক।বাকি সবই অতিথি শিক্ষক যারা বন্ধের দিনে এসে টানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্লাস নেন। এতে ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক কিছুই বুঝতে পারে না। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে না বুঝে মুখস্থ করে ছাত্র ছাত্রীরা পাস করে বের হচ্ছে। তাছাড়া শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ মাদারীপুর ও শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং কলেজ চালু হতে পারছে না প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে।
চূড়ান্ত বর্ষের বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীকে সাধারণ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে অপারগতা প্রকাশ করে। তাছাড়া অভ্যন্তরীণ শিক্ষকরা স্ট্যান্ডার্ড এর চেয়ে প্রায় ৪ গুন বেশি ক্লাস নেন এবং এতে ছাত্রছাত্রীদের যথেষ্ট আউটপুট দিতে পারে না। সিলেবাস জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকম শেষ করে বা অনেক সময় শেষ না করেও চলছে পরীক্ষা নেয়ার উৎসব। সিলেবাস শেষ হোক আর না হোক পরীক্ষা ৬ মাসের মধ্যে হতেই হবে, এই ধরনের এজেন্ডাতে চলছে কলেজগুলো। অনেক সময় দেখা যায় অভ্যন্তরীণ শিক্ষকরা অনেক বেশি কোর্স লোড থাকার কারণে শেষ দিকে এসে একসাথে মাত্র ২-৩ দিনে সিলেবাস শেষ করে দেন। এতে বের হচ্ছে হাজারটা অপরিপক্ব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার।
শিক্ষক সংকটের কারণে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলো হারাচ্ছে তাদের জৌলুস এবং বস্ত্র শিক্ষা নিয়ে সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বার বার কলেজ, ইনস্টিটিউট এবং ভোকেশনাল এর জন্য আলাদা নিয়োগবিধি করার জন্য বলা হলেও তা ৭ বছর হয়ে গেলেও আশার মুখ দেখেনি এবং ভবিষ্যতে এই আশার আলো দেখবে কিনা সন্দেহ।
উল্লেখ্য, বস্ত্র অধিদপ্তরের বর্তমান নিয়োগবিধি-২০১৪ তে রয়েছে হেলপার থেকে প্রফেসর হওয়া থেকে শুরু করে অনেক ধরনের অসংগতি যেখানে ৯ টি কলেজ, ইনস্টিটিউট এবং ভোকেশনাল সবাইকে নিয়ে সম্মিলিত নিয়োগবিধি করা হয়েছে।