বাংলাদেশে আগামী সপ্তাহে হতে যাচ্ছে ঈদুল আজহা। এই উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোরবানির গরুর হাটগুলো জমে উঠেছে। কিন্তু এসব হাটে নানা জাতের গরু থাকলেও বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে কয়েকটি জাত মানুষের কাছে বেশি জনপ্রিয়। এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক, হাটে কোন গরুগুলোর চাহিদা বেশি থাকে।
শাহীওয়াল
এই গরুর জন্ম পাকিস্তানের সিন্ধুতে। বহুদিন ধরে বাংলাদেশে এই গরু উৎপাদন করা হচ্ছে। দেখতে অনেকটা লাল রঙের, আর বেশ বড়। শাহীওয়াল জাতের গরু ধীর ও শান্ত প্রকৃতির। এই জাতের গাভীর ওজন ৪৫০ থেকে ৫৫০ কেজি এবং ষাঁড়ের ওজন ৬০০ থেকে ১,০০০ কেজি পর্যন্ত হয়। জন্মকালে এর বাছুরের ওজন হয় ২২ থেকে ২৮ কেজি।
হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান
“হোলস্টাইন” অর্থ “সাদাকালো ডোরাকাটা” আর স্থানের নাম “ফ্রিসল্যান্ড”-এর সঙ্গে মিলিয়ে এই গরুর নাম হয় “হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান”। ফ্রিজিয়ান জাতের গরু সাধারণত মাংসের জন্য পালা হয় না। কিন্তু তারপরও বাজারে মাংসের সরবরাহের বিরাট অংশই ফ্রিজিয়ান গরুর। একটা হোলস্টাইন জাতের পূর্ণ বয়স্ক ষাঁড়ের ওজন ১,১০০ কেজি পর্যন্ত হয় এবং উচ্চতা ৫৫ থেকে ৭০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।
ব্রাহমা
বাংলাদেশে যেসব ব্রাহমা জাতের গরু আছে, তার প্রায় সবই কৃত্রিম পদ্ধতিতে প্রজনন করা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রাহমা জাতের গরুর সিমেন বা শুক্রাণু এনে সরকার কয়েকটি জেলায় স্থানীয় খামারিদের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে এই জাতের গরু উৎপাদন শুরু করে। সাধারণত একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহমা জাতের ষাঁড়ের ওজন ৮০০ কেজি থেকে ১,০০০ কেজির বেশি হতে পারে। কোরবানির সময় বাজারে অস্বাভাবিক দাম হাঁকানো গরুগুলো মূলত এই ব্রাহমা জাতেরই গরু।
মীরকাদিম
এই জাতের গরু দেখতে ধবধবে সাদা। কিছুটা লালচে আর আকর্ষণীয় বাঁকা শিং। বাজারে এই গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে। তবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। এই গরুর দাম এক লাখ ২০ হাজার থেকে শুরু হয়ে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত হয়।
রেড চিটাগং ক্যাটেল
রেড চিটাগাং ক্যাটেল বা অষ্টমুখী লাল গরু বা লাল বিরিষ সংক্ষেপে আরসিসি আমাদের দেশের অধিক পরিচিত একটি গরুর প্রজাতি। রেড চিটাগাং ক্যাটেলের প্রধান চারণস্থল চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম। প্রাপ্ত বয়স্ক ষাঁড়ের ওজন প্রায় ২০০ থেকে ৪০০ কেজি হয়ে থাকে। গরুর ওজনের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ খাদ্য উপযোগী মাংস।